এখন থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুরাও পাবে জাতীয় পরিচয়পত্র। কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষণ করা হবে দেশের সব শিশু-কিশোরের তথ্য। এর মাধ্যমে কিশোর অপরাধ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ইউনিক আইডি নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।
চুরি, ছিনতাই থেকে শুরু করে ডাকাতি এমনকি খুন কিংবা মাদক ব্যবসা প্রায় সব ধরনের অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা। ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা কিশোর অপরাধের পেছনে অনেকগুলো সামাজিক কারণ থাকলেও রাষ্ট্রের তথ্যগত পদ্ধতিতে ব্যাপক ঘাটতিকে অন্যতম কারণ বলছেন বিশ্লেষকেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, ‘একজন কিশোর অপরাধীকে চিহ্নিত করার জন্য এই ডাটাবেজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সব শিশু-কিশোরের চিত্রটি আমাদের কোনো ডাটাবেজে নেই।’
জাতীয় তথ্যভাণ্ডারে শিশু-কিশোরদের ডাটাবেজ সংরক্ষণের জন্য ওই ১০ বছর বয়স থেকেই ইউনিক আইডি দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ইসি। পর্যায়ক্রমে এই আইডির নম্বরের ওপর ভিত্তি করেই হবে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ব্যাংক একাউন্ট এবং টিন এবং বিভিন্ন লাইসেন্সসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাগজপত্র।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.) বলেন, ‘আমাদের টার্গেট হলো পঞ্চম শ্রেণি। এখন ১৮ বছরের জন্য যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র তাদের জন্য অন্যরকম একটা পরিচয়পত্র হবে। এ ক্ষেত্রে স্কুলে স্কুলে গিয়ে হালনাগাদের কাজ করবে নির্বাচন কমিশন। তবে স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশু-কিশোরদের তথ্য হালনাগাদ হবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্কুলে বা কলেজে আমরা যাব। সেখানে তাদের তথ্যগুলো আমরা নেব। ঝরে পড়া শিশু-কিশোরদের জন্য আমাদের বর্তমান যে পদ্ধতি আছে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তথ্য হালনাগাদ করা।’
তথ্য ভাণ্ডারের আওতায় পথশিশুদের আনার জোর তাগিদ দেন বিশ্লেষকরা।
তৌহিদুল হক বলেন, ‘এটা একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে সেটা সম্পূর্ণ এই কার্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। পথশিশু নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের কাছে কিছু চিত্র আছে।’
ইউনিক আইডি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এরইমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসির এনআইডি উইং।