বান্দরবানের বিভিন্ন লোকেশনে নির্মিত একটি মোবাইল ফোন কোম্পানীর বিজ্ঞাপন নিয়ে সম্প্রতি অনলাইনে বেশ আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেইসব সমালোচনার জবাবে ২২ মে বিকেলে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন এর নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন। পোস্টটি এরকম:
“আমার নির্মিত নতুন একটা বিজ্ঞাপন নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আমি এর সঙ্গে কিছু যোগ করতে চাই।
এই বিজ্ঞাপনটি আমি নির্মাণ করেছি কিন্তু এটার মূল ভাবনা আমার ছিল না। থার্ড পার্টি যখন কনসেপ্টটা-টা দেয়, আমার কাছে ভালো লাগে। কনসেপ্টটা হলো পরিবার নিয়ে। একটা প্রত্যন্ত গ্রাম। যেখানে মুসলিমরা হলো সংখ্যালঘু। এটা রমজান মাসের ওপর ফোকাস করা একটা বিজ্ঞাপন। কিন্তু এর মূল ভাবনা শুধু রমজানের রোজা রাখায় সীমাবদ্ধ না। এটা একাত্মতা আর বন্ধনেরও গল্প। আমার কাজটি যেন বাস্তবসম্মত হয়, তাই আমি আমার টিমে এথনিক কমিউনিটি থেকে প্রতিনিধি রেখেছিলাম।
কিন্তু যেহেতু বিজ্ঞাপনের প্রথমে লেখা দেখায়-‘A Nuhash Humayun Film’, তাই পরিচালক হিসাবে এর সব দায়িত্ব আমারই। এই বিজ্ঞাপনটা আমিই নির্মাণ করেছি, গল্পটাও আমার পছন্দ হয়েছে, এর স্ক্রিপ্ট আমি পরিমার্জন করেছি, যেই সোর্স থেকে তথ্য পেয়েছি– তাও বিশ্বাস করেই ব্যবহার করেছি। এই বিজ্ঞাপনের সব দায়দায়িত্ব মাথায় নিয়েই, আমি গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি তাদের কাছে, যারা বিজ্ঞাপনটি দেখে কোনোভাবে কষ্ট পেয়েছেন অথবা যাদের কাছে মনে হয়েছে আমি চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছি। আমি বিনীত ভাবে জানাতে চাই, কাউকে কষ্ট দেওয়া বা আঘাত করা কখনই আমার উদ্দেশ্য ছিল না।
চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আর সমস্যা মিডিয়াতে তেমনভাবে সামনে আসে না। আমরা সেই সব গুরুত্বপূর্ণ জিনিসকে বাদ দিয়ে বিজ্ঞাপনটা নির্মাণ করেছি খুব সরলীকরণ করে, দেখে ভালো লাগবে এমন একটা গল্প নিয়ে। যেখানে অবশ্যই আগে চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সেই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে আসা প্রয়োজন ছিল।
অনেক মানুষ আমাকে তাদের মতামত জানাচ্ছেন। কিছু ভালো, কিছু খারাপ আর কিছু বেশ কঠিন। অবশ্যই এই সব মতামত আমাকে নির্মাণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আরও অনেক দায়িত্ববান ও যত্নশীল করে তুলবে।
আমি এটাও দেখলাম অনেকেই এখানে টেনে আনছেন আমার পরিবারকে, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছেন আমাকে, যেই ছেলেটি বিজ্ঞাপনের প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন-তাকেও নোংরাভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এই সব ঘৃণা প্রকাশ মূল বিষয়ের সঙ্গে সংগতিহীন।
এই বিজ্ঞাপনের গল্পটি আমার ভালো লেগেছিল, কারণ এটার মূল ভাবনা ছিল একাত্মতা প্রকাশ । আমার ভাবতে খুব খারাপ লাগছে, এই বিজ্ঞাপনটা কোনোভাবে বিভেদ তৈরি করছে! কোনোভাবেই সেটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না।
যারা এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে লিখছেন, কথা বলছেন, আর ভালো মন্দ যাই ভাবছেন- আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমি আপনাদের কথা শুনছি, শিখছি আর আর পরিণত হচ্ছি।”