রফিকুল আলম মামুন।। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার ঘটনায় অজানা আতংকে দিন কাটাচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। প্রান্তিক পর্যায়ের নেতা কর্মীদের অনেকেই আবার আতংকে বাড়িঘর ছাড়া হয়েছেন। শহরে এসে থাকছেন দিনের পর দিন।
উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নামে বে-নামে পাড়ায় মহল্লায় হুমকি দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে এলাকা ছাড়তে।
বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পাইহ্লা অং বলেন, ‘আমরা অজানা শংকায় দিন কাটাচ্ছি। কখন কাকে কোথায় হত্যা করা হবে সে আশংকা আমাদের। ব্যবসা বাণিজ্যও ঠিকমতো করতে পারছি না। এ অবস্থায় আমরা আমাদের নিরাপত্তা দাবি করছি। দলের পক্ষ থেকেও সাবধানে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে।’
রোয়াংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘জেএসএস এর সশস্ত্র নেতাকর্মীরা নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। জীবিকার তাগিদে চলাফেরা করতে হয় কিন্তু তাও পারছি না।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জনি সুশীল বলেন, ‘প্রত্যন্ত এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা সন্ত্রাসীদের দ্বারা বারবার আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য বলেছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক লক্ষী পদ দাস বলেছেন, ‘পাহাড়ে জেএসএস আবারো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। আমরা দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে বলেছি। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি অবগত করেছি। আইনশৃংখলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে।’
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ.কে. এম জাহাঙ্গীর এক ভিডিও বার্তায় দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের সাবধানে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে জেএসএস একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তারা চায়না পাহাড়ে আওয়ামী লীগ থাকুক।’
বান্দরবান জেলায় চলতি বছরের গেলো ৬ মাসে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৬ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। এসব হত্যাকান্ডে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) কে দায়ী করে আসছে জেলা আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার মামলায় জেএসএস এর অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে জেলেও রয়েছেন।
তবে জেএসএস নেতারা বারবার তাদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। জেএসএস এর পক্ষ থেকে বলা হয়- আওয়ামী লীগের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি করতেই তৃতীয় পক্ষ এসব কাজ করে থাকতে পারে।
আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও সন্ত্রাসী কাজ বন্ধ করতে বারবার সন্ত্রাসী গ্রেফতার, চিরুনী অভিযান চালানোর পরও পাহাড়ে অপহরণ ও হত্যাকান্ড ঘটেই চলেছে।