সরকারি নির্মাণ কাজে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে ইটের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে ব্লক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ ও বন সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ইটের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করার জন্য চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) টেন্ডার ডকুমেন্টসে ব্লক ব্যবহারের হার ১০ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২০ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬০ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৪ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে ইটের ব্যবহার বন্ধ করে ব্লকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে সুপারিশ দিতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয় সভায়।
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আর পুরোনো ইটের ব্যবহার করব না। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মধ্যে শতভাগ ব্লক ব্যবহারে যাব আমরা।’
পরিবেশ সচিব বলেন, ‘রাজউক বা এমন সরকারি সংস্থার বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে এই হার অনুযায়ী ব্লক ব্যবহারের বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা যেতে পারে।’
ইটের ক্ষেত্রে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেয়া হবে। আর ব্লক উৎপাদনকারীদের ট্যাক্স মওকুফ করে দেয়া হবে বলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি জানান।
সভায় জানানো হয়, সারাদেশে প্রায় সাড়ে সাত হাজার ইটভাটা রয়েছে। বছরে প্রায় ২৩০ কোটি ইট উৎপাদনের জন্য ৩৩৫ কোটি ঘনফুট মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে। উপরিভাগের মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরির ফলে কৃষিজমির উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। ঢাকা শহরের বায়দূষণের জন্য এর চারপাশের ইটভাটা প্রায় ৫৮ শতাংশ দায়ী।
দেশের ইটভাটাগুলোতে বছরে প্রায় ৫৭ লাখ টন কয়লা এবং কোনো কোনো ভাটায় গোপনে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ফলে পরিবেশ ও বায়ুদূষণ হচ্ছে বলেও জানান পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিনিধি।