জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াং হিলি গতকাল রবিবার সকাল ৯টায় কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এসময় ক্যাম্পে বসবাসরত হিন্দু রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন তিনি। রোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইয়াং হিলি বালুখালী ১ নম্বর অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ করেন। বালুখালী আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) গোল ঘরে অপেক্ষমান ১৫ জন মৌলভীর সঙ্গে একান্তে আলাপ করেন। মৌলভী আব্দুল্লাহ ও মোলভী জুবাইরের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মৌলভীরা ইয়াং হিলিকে মিয়ানমার সেনা নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন।
তারা বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত গেলে হিংস্র রাখাইন সম্প্রদায় ও বর্মি সেনারা তাদের উপর বিভিন্ন অজুহাতে নির্যাতন চালাতে পারে। এ জন্য জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দলের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যাবাসনের পরপরই রোহিঙ্গাদের যার যার বাড়িঘরে বা বসতভিটায় ফিরে যাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিতে হবে। যাতে রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা কবতে পারে। তাদের দাবি-দাওয়া শুনে ইয়াং হিলি আশ্বস্ত করে বলেন, সব ধরনের নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।
পরে ইয়াং হিলি হানিফ আহাম্মদ (৬০), ফয়েজ আহমদ (৪০), ফয়সাল আহমদ (৩৭) ও ওমর শরীফসহ (৭৫) চারজন বয়োজ্যেষ্ঠকে প্রশ্ন করেন তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি কি না। তারা বলেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সমস্ত ক্ষতিপূরণ ফিরিয়ে দিলে তারা নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যেতে রাজি আছে। পরে ইয়াং হিলি দুপুর ১টার দিকে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গেলে রাখাইনে তাদের ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণনাশ, ধর্ষণ, কারাবন্দির বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন ইয়াং হিলির হাতে তুলে দেয়।
পরে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন ইয়াং হিলি। তিনি জানতে চান ক্যাম্পে কোনো সমস্যা আছে কি না? তদুত্তরে ক্যাম্প ইনচার্জ বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পে কোনো সমস্যা নেই। তবে বর্ষাকালে অতি বৃষ্টির ফলে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
-দৈনিক ইত্তেফাক