জুমচাষ
সবুজ পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সোনালি ঢেউ

জুমের ধান কাটছেন এক নারী। ছবিটি রাঙ্গামাটি কাইন্দে পাহাড়ের বাদুরহাতছড়া থেকে তোলা।

বান্দরবান ও রাঙামাটির পাহাড়ে পাকতে শুরু করেছে জুমের ধান। কাটাও শুরু হয়েছে। মাথায় থুরুং নিয়ে ধান কাটায় ব্যস্ত জুমিয়ারা। তাঁদের ঘরে ঘরে এখন নতুন ধানের উৎসব।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বান্দরবানে এবার প্রায় ২১ হাজার ৫০০ একর পাহাড়ি জমিতে জুম চাষ হয়েছে। আর রাঙামাটিতে চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৮২২ একর জমিতে।

গত মঙ্গলবার বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সবুজ বনাঞ্চলবেষ্টিত পাহাড়-টিলাগুলোর ভাঁজে ভাঁজে সোনালি পাকা ধান। জুমঘরগুলো থেকে ভেসে আসছে জুমচাষিদের উল্লসিত আওয়াজ অথবা গানের সুর।

চিম্বুক পাহাড়ের চূড়ার কাছে জামিনীপাড়ায় মেনওয়াই ম্রো বলেন, তাঁদের দুই একর খেতে ধান পেকেছে। থান কাটতে এখন চলছে বিরামহীন কাজ। আরেক জুমচাষি সিংক্রাত ম্রো বলেন, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় এবং যতটুকুই বৃষ্টি হয়েছে, তাও সময়মতো না হওয়ায় আশানুরূপ ফলন হয়নি।

বান্দরবানের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, জেলার থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি ও আলীকদম উপজেলায় ম্রো, খুমি, ত্রিপুরা, খেয়াং ও বমরা সবচেয়ে বেশি জুম চাষ করে থাকেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, এ জেলায় এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ জুমের ধান আহরণ করা হয়েছে।

রাঙামাটিতে ছাগল ও মুরগি জবাই করে জুমের ধান কাটার উদ্বোধন করেছেন জুমিয়ারা। এ জেলার সদর উপজেলা, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, রাজস্থলী, লংগদু, নানিয়ারচর, কাউখালী, বরকল, কাপ্তাই ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় এখন চলছে ধান কাটা।

বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের শিজকছড়া এলাকার জুমচাষি রবীন্দ্র লাল চাকমা বলেন, ‘এখন চলছে জুমের ফাং (ধান কাটা উদ্বোধন) উৎসব। মুরগি ও ছাগল জবাই দিয়ে পাহাড়িদের জুমের ধান ফাং উৎসবের প্রথা বহু বছর ধরে চলে আসছে।’

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, এ বছর এ জেলায় জুমের ফলন ভালো হয়েছে।

সৌজন্যে ঃ দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন।

শেয়ার করুন