শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে আর রহস্য নয়

  • শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে সব রহস্যের অবসান হলো।
  • দুবাই পুলিশ এই নায়িকার মৃত্যুর মামলা ‘বন্ধ’ ঘোষণা করেছে।
  •  শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুরকেও সন্দেহ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে সব রহস্যের অবসান হলো। দুবাই পুলিশ আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটায় এই নায়িকার মৃত্যুর মামলা ‘বন্ধ’ ঘোষণা করেছে। এ সময় শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুরকেও সন্দেহ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় খালিজ টাইমস থেকে জানা গেছে, শ্রীদেবীর মরদেহ আল কিউসাইস মর্গ থেকে বিমানবন্দরে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে আজ দুবাইয়ের স্থানীয় সময় বেলা একটার দিকে পুলিশ শ্রীদেবীর মরদেহ মুম্বাই নেওয়ার অনুমতিসংক্রান্ত কাগজ ও মরদেহ ভারতের দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আর তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। শ্রীদেবীর মরদেহ মুম্বাইয়ে আনার প্রক্রিয়ায় বাবাকে সাহায্য করার জন্য আজ দুবাই পৌঁছেছেন তাঁর প্রথম স্ত্রীর ছেলে বলিউড তারকা অর্জুন কাপুর।

দুবাই সরকারের তথ্যকেন্দ্রের অফিশিয়াল টুইটার পেজে জানানো হয়, ‘শ্রীদেবী মৃত্যু মামলার তদন্ত শেষ। এ মামলা বন্ধ হওয়ার পর দুবাইয়ের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভারতীয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মরদেহ তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

আরেক টুইটে জানা গেছে, ‘শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে এখন আর কোনো রহস্য নেই। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, অচেতন অবস্থায় বাথটাবে পড়ে গিয়ে এ অভিনেত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।’

গতকাল সোমবার সকাল থেকেই আন্ধেরির লোখান্ডওয়ালায় কাপুরদের ‘ভাগ্য’ বাংলোর জানলায় ছিল সাদা পর্দা। পুরো বাড়ি সাদা কাপড় আর সাদা ফুলে মুড়ে দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে যশ চোপড়া পরিচালিত ‘লামহে’ ছবির শুটিংয়ের সময় শ্রীদেবী বলেছিলেন, মৃত্যুর পর তাঁর বাড়ি, শববাহী গাড়ি—সবকিছুই যেন সাদায় মুড়ে দেওয়া হয়।

আজ রাত নয়টার পর মুম্বাইয়ে শ্রীদেবীর মরদেহ পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে কর্ণাটক থেকে ১৫০ জনের ভক্তের দল মুম্বাই এসেছে শ্রীদেবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। আরেকটি ভক্তের দল এসেছে তেলেঙ্গেনা থেকে। শ্রীদেবীর মরদেহ মুম্বাই আনার খবরে আন্ধেরির লোখান্ডওয়ালায় তাঁর বাড়ির সামনে এরই মধ্যে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এরই মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আগেই জানানো হয়েছে, শ্রীদেবীর মরদেহ ফিরছে মুম্বাই। দুবাই পুলিশ এরই মধ্যে বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মরদেহ মুম্বাই নেওয়ার অনুমতিসংক্রান্ত কাগজ ও মরদেহ ভারতের দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আর তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত নবদীপ সুরি খালিজ টাইমসকে বলেছেন, ‘ন্যূনতম সময়ের মধ্যে শ্রীদেবীর মরদেহ মুম্বাই পাঠানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কাজ করছি।’ আর বনি কাপুরের মুখপাত্র প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, আজ রাতেই শ্রীদেবীর মরদেহ নিয়ে একটি প্রাইভেট জেট মুম্বাই এসে পৌঁছাবে। শ্রীদেবীর মরদেহের সঙ্গে ফিরছেন তাঁর স্বামী বনি কাপুর। তাঁকে আজ তৃতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুবাই পুলিশ।

গত শনিবার শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর থেকেই নাকি বনি কাপুর পরদিন সকাল পর্যন্ত শিশুর মতো কেঁদেছেন। এমনটা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বনি কাপুর প্রযোজিত ও শ্রীদেবীর শেষ চলচ্চিত্র ‘মম’-এর অভিনয়শিল্পী আদনান সিদ্দিকি। তিনি পাকিস্তানের নাগরিক। তখন তিনি দুবাইয়ে ছিলেন। শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়ে দ্রুত দুবাইয়ের জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ার হোটেলে ছুটে যান। এই হোটেলের ২২০১ নম্বর রুমে ছিলেন শ্রীদেবী।

এদিকে বাবার বিপদের সময় তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন ছেলে বলিউড তারকা অর্জুন কাপুর। বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী শ্রীদেবীকে কখনোই মেনে নিতে পারেননি অর্জুন কাপুর। দুই বোন জাহ্নবী আর খুশির সঙ্গেও কোনো সম্পর্ক ছিল না তাঁর। কিন্তু শনিবার দুবাইয়ে শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর চাচা অনিল কাপুরের বাড়িতে জাহ্নবী আর খুশির সঙ্গে দেখা করতে ছুটে যান অর্জুন। এদিকে শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছিল নানা জল্পনা। দুবাই পুলিশ তিন দফা বনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একটি সূত্র প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিকে জানিয়েছে, বাবা বনি কাপুরের এমন বিপদের সময় তাঁর পাশে দাঁড়াতে আজ সকালে দুবাই রওনা হয়েছেন অর্জুন কাপুর। অর্জুনের ছোট বোন অংশুলা কাপুরও গতকাল জাহ্নবী ও খুশির সঙ্গে দেখা করতে যান।

কয়েক বছর আগে অর্জুন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘এই নারী (শ্রীদেবী) আর তাঁর মেয়েদের আমার জীবনে কোনো অস্তিত্ব নেই।’

শেয়ার করুন