তবে টবে কী কী ফুলগাছ লাগাবেন? সেটা আপনাকে একটু আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। তাহলে আপনার কাজ করতে সুবিধা হবে। শীতকালে টবে লাগাতে পারেন গাঁদা, গোলাপ, ন্যাস্টারশিয়াম, প্যানজি, পিটুনিয়া, ভারবেনা, ক্যামেলিয়া, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কারনেশন, স্যালভিয়া, গোলাপ, জারবেরা, এজালিয়া ইত্যাদি।
একটি কথা, বাগানের মাটিতে লাগানো গাছের ফুল ফোটার সময় টবের গাছের চেয়ে ১০-১২ দিন বেশি লাগবে। যারা মাত্র কয়েকটা গাছ লাগিয়ে এবারই টবে গাছ লাগানোর হাতেখড়ি দিতে চান তাদের বলব, সহজে মরে না এবং একটু কম যত্ন নিলেও ফুল ফোটে, এমন সব গাছ লাগাতে।
টবে ফুলগাছ লাগাবেন কী করে
প্রথমে গাছের সঙ্গে মানানসই সাইজের টব সংগ্রহ করতে হবে। তবে ছোট গাছের জন্য বড় টব হলে ক্ষতি নেই, কিন্তু বড় গাছের জন্য ছোট টব চলবে না।
প্রতি টবের জন্য দোআঁশ মাটির সঙ্গে তিন ভাগের এক ভাগ পরিমাণ জৈব সার বা পচা গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে। এর সঙ্গে একমুঠো হাড়ের গুঁড়ো, দুই চা-চামচ চুন, দু মুঠো ছাই মেশাতে পারলে ভালো হয়। এতে টবের মাটি দীর্ঘদিন উর্বর থাকবে।
মৌসুমি ফুলের ক্ষেত্রে মাসখানেক বয়সের ফুলের চারা টবে রোপণ করা উচিত। অন্য চারার বেলায় অল্পবয়সী ভালো ও তরতাজা, গাট্টাগোট্টা দেখে চারা বা কলম লাগানো ভালো।
চারা লাগানোর পর আস্তে আস্তে চাপ দিয়ে গোড়ার মাটি শক্ত করে দিতে হবে। লাগানোর পর গোড়ায় পানি দিতে হবে।
গাছকে খাড়া রাখার জন্য অবলম্বনের প্রয়োজন হয়। গাছের চারা অবস্থা থেকেই এ ব্যবস্থা করতে হয়। এ কাজে বাঁশের কঞ্চি বা স্টিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
টবে গাছের গোড়ার মাটি একেবারে গুঁড়ো না করে চাকা চাকা করে খুঁচে দেওয়া ভালো। এক্ষেত্রে মাটি খোঁচানোর গভীরতা হবে ৩-১০ সেন্টিমিটার বা ১ থেকে ৪ ইঞ্চি। এ কাজটি প্রতি ১০ দিনে একবার করে করতে হবে।
কুঁড়ি আসার লক্ষণ প্রকাশ পেলে ৫০ গ্রাম টিএসপি (কালো সার), ১০০ গ্রাম ইউরিয়া (সাদা সার) ও ২৫ গ্রাম এমওপি (লাল সার) একসঙ্গে মিশিয়ে প্রতি গাছে এক চা-চামচ করে ১০ দিন অন্তর দিতে হবে।
তবে এক মৌসুমে এই রাসায়নিক সার তিনবারের বেশি দেওয়ার দরকার নেই। তবে রাসায়নিক সার ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন সার কোনোক্রমেই শিকড়ের ওপর না পড়ে।
বেশি দিন ধরে ফুল ফোটাতে চাইলে গাছে কখনো ফুল শুকাতে দিতে নেই। ফুল শুকানো শুরু হলেই ফুল কেটে দিতে হয়। এতে ভালো ফুল পাওয়া যায়। গাঁদা, অ্যাস্টার, চন্দ্রমল্লিকা প্রভৃতি গাছ থেকে বেশি ফুল বেশি দিন ধরে পেতে চাইলে প্রথম দিকে আসা কিছু কুঁড়ি চিমটি দিয়ে ছেঁটে দিতে হবে।