জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের জনতার ঢল নেমেছে।
শনিবার স্মৃতিসৌধ চত্বরে ফুল হাতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের দেখা মেলে। অনেকে এসেছেন পরিবার-পরিজন, স্বজন বা বন্ধুদের নিয়ে। কেউ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করছেন, কেউ বা নীরবে দাঁড়িয়ে বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছেন।
সকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এর পর বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।
মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এর পর স্মৃতি সৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। শ্রদ্ধা জানান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরাও। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও রাজধানীর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেকে।