লোকজ জ্ঞানের উপযুক্ত মালিকানা স্বত্ব এবং তার বাণিজ্যিক ব্যবহারের বিপরীতে রয়্যালটি পেতে যাচ্ছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। ভেষজ উদ্ভিদ, স্থানীয় পোশাকের ডিজাইন, সংগীত, সাহিত্যসহ যে কোনো ধরনের লোকজ জ্ঞান বা অভিব্যক্তিকে রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে মালিকানা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উদ্যোগটি সফল হলে পাহাড়ের বিভিন্ন ধরনের মেধা ও আদি জ্ঞান দেশে-বিদেশে সবার ব্যবহারের জন্যে উন্মুক্ত হবে। সেই সাথে এর মালিকানার বিষয়টিও নিশ্চিত হবে।
২৬ নভেম্বর সোমবার বিকেলে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘লোকসাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি সনাক্তকরণ ও মূল্যমান নির্ধারণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে আয়োজকরা এ কথা জানান। সেমিনারে মূল আলোচনা উপস্থাপন করেন মেধাস্বত্ব বিশেষজ্ঞ ও কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইট জাফর আজাদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোঃ দাউদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল কালামসহ জেলার বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, লেখক, গবেষক, সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
কবি নূরুল হুদা জানান, পাহাড়ের অধিবাসীরা তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে এমনও অনেক লোকজ জ্ঞান ব্যবহার করেন, যা পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে পারে। মানবকল্যাণে তা হয়ে উঠতে পারে বৈশ্বিক সম্পদ। আর এই জ্ঞান সংরক্ষণ, বিস্তার এবং তার বিপরীতে জ্ঞান আবিষ্কারক এবং চর্চাকারীদের উপযুক্ত আর্থিক মূল্যায়নসহ মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ শুরু করেছে সরকার। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হলে এখানকার লোকজ জ্ঞান ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের যে কেউ যে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক পণ্য বা সেবা প্রদান করলে তার বিনিময়ে এখানকার মানুষরা উপযুক্ত আর্থিক মূল্য পাবেন। একটি নির্দিষ্ট কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই আর্থিক সুবিধা সেইসব জাতিগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যয় করা হবে।
তিনি জানান, এই জরিপ ও গবেষণায় স্থানীয় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা কাজ করছেন। তালিকাভুক্তি শেষ হলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে স্ব-স্ব জাতিগোষ্ঠীর নামে রেজিষ্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
– নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান