লকডাউনে সব জায়গায় চলাচল সীমিত থাকায় পাহাড়ি শহর বান্দরবানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইন শপিং।
যাতায়াতের বাড়তি বিড়ম্বনা এড়াতে জেলা শহরের বাসিন্দারা নিত্যপণ্যের জন্য এখন নির্ভর করছেন ফেইসবুকভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর।
ইতোমধ্যে বান্দরবান সদরে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেইসবুকে এবং ফোনে অর্ডার নিয়ে পণ্য সরবরাহ করছে। তাদের মধ্যে প্রথম কার্যক্রম শুরু করে ‘হাতের মুঠোয় বাজার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
‘হাতের মুঠোয় বাজার’-এর উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন আফতাব আহমেদ শাহীন জানান, গত বছরের নভেম্বর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়। তারা মূলতঃ ফোনে অর্ডার নিয়ে বাজার থেকে সেই পণ্য সংগ্রহ করে গ্রাহককে পৌঁছে দেন। সাধারণ ডেলিভারি চার্জ ৩০ টাকা। পণ্যের ওজনভেদে চার্জ কিছুটা কমবেশি হয়। তারা এ পর্যন্ত প্রায় ১৭শ’ অর্ডার ডেলিভারি করেছেন।
গত বছরের নভেম্বরে পণ্য বিক্রি শুরু করে আরেকটি প্রতিষ্ঠান ‘আমাদের দোকান’। জেলা সদরের নিউ গুলশানে ‘একান্নবর্তী’ নামক একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের উদ্যোগে এটি শুরু করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত তারা প্রায় ১৫শ’ অর্ডার ডেলিভারি করেছেন। বাইসাইকেল নিয়ে পুরো বান্দরবান শহর এবং আশপাশের এলাকায় ডেলিভারি দেয়া হয়। দূরত্ব এবং পণ্যের ওজন অনুযায়ী ন্যুনতম ডেলিভারি চার্জ নেওয়া হয়।
এ বছরের জুন মাসে আত্মপ্রকাশ করে ‘দুয়ারে বাজার’ নামে আরো একটি ফেইসবুকভিত্তিক অনলাইন শপ। প্রতিষ্ঠানটি শুরুতেই চমক হিসেবে বেশ কিছু আকর্ষনীয় অফার নিয়ে এসেছে।
‘দুয়ারে বাজার’-এর উদ্যোক্তা এবং হলিডে ইন রিসোর্টের স্বত্ত্বাধিকারী জাকির হোসেন জানান, ‘আমরা স্থানীয় বাজার থেকে কোনো পণ্য সংগ্রহ করি না। কারণ স্থানীয় বাজার থেকে পণ্য কিনলে বাজারে একটা বাড়তি চাপ তৈরি হবে এবং সাধারণ গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হবেন। তাই আমরা সবজি, গ্রোসারি পণ্য থেকে শুরু করে মাছ-মাংস পর্যন্ত সবকিছুই বান্দরবানের বাইরে থেকে সংগ্রহ করি’।
তিনি আরো জানান, ‘আমরা গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন সময়ে আকর্ষনীয় অফার দেবো। বর্তমানে আমাদের একটা ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালু আছে। স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং ঔষধের ক্ষেত্রে আমরা ১৫ মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি নিশ্চিত করছি। এই ইমার্জেন্সি অর্ডারের ক্ষেত্রে কোনো ডেলিভারি চার্জ নেয়া হচ্ছেনা।’
বাংলাদেশ বেতার, বান্দরবান কেন্দ্রের সিনিয়র সংবাদপাঠিকা শিরিন খানম ফেইসবুকে জানান, তিনি একটি অনলাইন শপে অর্ডার দিয়ে তাজা মাছ এবং অন্যান্য সামগ্রী কিনেছেন। তাদের সার্ভিসে তিনি অত্যন্ত খুশি।
জেলা শহরের আরেক গ্রাহক সুজিত নেওয়ার বলেন, ‘ফেইসবুকে অর্ডার দিয়ে খাসির মাংস কিনলাম। মাংসের কোয়ালিটি খুবই ভালো পেয়েছি। তবে ঘন্টায় ঘন্টায় যেন দাম বাড়ানো না হয়’।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১০ জুন থেকে বান্দরবান সদর উপজেলা, পৌরসভা এলাকা এবং রুমা উপজেলায় লকডাউন ঘোষণা স্থানীয় প্রশাসন। লকডাউনে সপ্তাহে দুই দিন করে নিতপণ্যের বাজার খোলা রাখার ঘোষণা দেয়া হয়।