রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত বিচারিন্দ মহাথের এর মহাপ্রয়াণে জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৬ মার্চ মঙ্গলবার সকালে রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন কমিটির সহসভাপতি পঞঞানন্দ মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের অধ্যক্ষ ও উদযাপন কমিটির প্রধান সম্পাদক ভদন্ত ইন্দাচারা মহাথের, সদস্য সচিব তিক্ষিন্দ্রিয়থের, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চহ্লা মং মারমা, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমাসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, অনুষ্ঠানকে ঘিরে তিন পার্বত্য জেলা থেকে ৪ শতাধিক ভান্তেসহ লক্ষাধিক মানুষের আগমন ঘটবে। অনুষ্ঠানে আগত মানুষের সার্বিক নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি ৪ শতাধিক স্থানীয় ভলান্টিয়ার কাজ করবে।
জানা যায়, বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা মৃত উ সাজাই মারমা চতুর্থ সন্তান মংম্রা মারমা। যা পরবর্তীতে বৌদ্ধ ধর্মের সন্ন্যাসী ভিক্ষু হওয়ার পর নাম রাখা হয় ভদন্ত বিচারিন্দ মহাথের। তিনি ১৯৩৩ সালে রোয়াংছড়ি পাড়ায় জন্ম গ্রহন করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৪৮ সালের ১৫ বছর বয়সে শ্রমণ বা প্রবজ্জ্যা গ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালের ২২ বছর বয়সে ভান্তের দীক্ষা নেন। শ্রমণ্য ধর্মে দীক্ষা নেওয়ার পর মায়ানমার রাজধানী ইয়াঙ্গুন শহরে খারাইক্ষ্যং এ লেখা পড়া করে বসবাস করেন। ভান্তে থাকাকালে থেরো, মহাথেরো ও সংঘনায়ক পদে উপাধি লাভ অর্জন করেন। ভান্তে অবস্থায় ৬৮ বছর বষার্বাস বা ওয়া ছিলেন। তিনি ৭০ বছর যাবৎ বৌদ্ধ ভিক্ষু সন্নাসী হিসেবে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রসারে কাজ করেছিলেন। তিনি ৯০ বছর ৬ মাস বয়সে গতবছর ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি কোন ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারী রেখে যাননি।
এছাড়াও, পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬ষ্টতম সংঘরাজ, বর্ষীয়ান ধর্মীয় গুরু,সংঘনায়ক ভদন্ত বিচারিন্দ মহাথের তিনি আজীবন রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উপলক্ষ্যে আগামী ২৯ ও ৩০ মার্চ ২ তিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।