মশা নিধনে ডিএসসিসির বিভিন্ন পরিকল্পনা কার্যকর না হওয়ায় এবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাঙ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ গুলো নগরীর বিভিন্ন পুকুর ডোবা ও জলাশয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যে ডিএসসিসির কয়েকটি জলাশয়ে এরই মধ্যে কিছু ব্যাঙ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, ‘এই উদ্যোগ হাস্যকর। কারণ মাছ, হাঁস ও ব্যাঙ চাষ কখনও মশার লার্ভা ধ্বংস করতে পারে না। পৃথিবীর কোনও দেশে এমন নজির নেই।’ ডিএসসিসির এই উদ্যোগের বিষয়ে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মশা দমনের জন্য ডিএসসিসি পাতিহাঁস ও তেলাপিয়া মাছ ছেড়ে ছিলেন। নতুন করে ১৫ হাজার ব্যাঙ আমদানি করছেন। তবে পৃথিবীর কোথাও হাঁস ও ব্যাঙ দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ হয়নি, হবেও না। হাঁস ও ব্যাঙের খাবার অন্য কিছু।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ৩৭ প্রজাতির ব্যাঙ রয়েছে। এই ব্যাঙের প্রত্যেকটির এক একটি রেঞ্জ রয়েছে। সুন্দরবন বা কক্সবাজার এলাকার ব্যাঙ যদি ঢাকায় এনে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে দূষিত পরিবেশে তা মারা যাবে। কিছু কিছু ব্যাঙ আছে খুবই দুর্লভ। সেগুলোও যদি এনে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বড় ব্যাঙ মশার লার্ভা খায় না। তারা স্থলভাগে থাকে। তাদের ৯৯ শতাংশ খাবার হচ্ছে বড় খাবার। তারা ঘাস থেকে শুরু করে মাংস পর্যন্ত খায়। এই খাবার থেকে তারা অনেক ক্যালোরি পায়।’
ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই মাছ ও হাঁস চাষের মাধ্যমে নগরীতে মশা নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়েছিলেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তাই নগরীর বিভিন্ন পুকুরে মাছ ও হাঁস ছাড়া হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই মাছ ও হাঁস পুকুর ও জলাশয়ে অতিরিক্ত দূষণের কারণে মারা যায়।
এছাড়াও ডিএসসিসির এসব উদ্যোগে যখন কোনওভাবেই মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, তাই নতুন করে নগরীর পুকুর-ডোবাসহ জলাশয়গুলোতে ব্যাঙ অবমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত দূষণের শিকার পুকুর ও জলাশয়ের জলে এই ব্যাঙ কতদিন বাঁচবে তা নিয়ে সিটি করপোরেশনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।