রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ বেদিতে প্রথম ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’ বাজানো হয়। শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাষ্ট্রপতির পরনে ছিল কালো মুজিব কোট এবং প্রধানমন্ত্রীর পরনে শোভা পাচ্ছিল সাদা-কালো রঙের শাড়ি, তার ওপর কালো রঙের চাদর।
এর আগে রাষ্ট্রপতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান তাকে স্বাগত জানান। এছাড়া শহীদ বেদিতে ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এরপর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানান তিন বাহিনীর প্রধানরা, পুলিশের মহাপরিদর্শক, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারসহ বিদেশি মিশনের কূটনীতিকরা। এরপর শ্রদ্ধা জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডাররা, ভারত-বাংলাদেশ মিডিয়া ডায়ালগে অংশগ্রহণকারীর প্রতিনিধিরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিকরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, একে আজাদের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাসদ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী দল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতারা।
পরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, গণসংহতি আন্দোলন, এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলা একাডেমি, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
রাত সাড়ে ১২টার পর শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের জনগণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। আজ বুকে শোকের প্রতীক কালোব্যাজ ধারণ করে খালি পায়ে সর্বস্তরের মানুষ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশের স্কুল-কলেজ, জেলা ও থানা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন দেশের সর্বস্তরের মানুষ।