কবি, নারী আন্দোলনের নেত্রী বেগম সুফিয়া কামালের ১০৯ তম জন্মবার্ষিকী আজ।
১৯১১ সালের এই দিনে বরিশালের শায়েস্তাবাদে নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নারীর অধিকারের জন্য লড়াইয়ের পাশাপাশি সামাজিক-রাজনৈতিক বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমৃত্যু সোচ্চার ছিলেন তিনি।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।
পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন।
১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। তিনি পাকিস্তানের পক্ষে স্বাক্ষর দান প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দুদিন আগে তিনি প্রেসিডেন্ট হাউসে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছিলেন। তার মানসিক দৃঢ়তা স্বয়ং ইয়াহিয়া খানকে পর্যন্ত বিস্মিত করেছিল।
সুফিয়া কামালের কবিতা চীনা, ইংরেজি, জার্মান, ইতালিয়ান, পোলিশ, রুশ, ভিয়েতনামিজ, হিন্দি ও উর্দু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ৮৯ বছর বয়সে ঢাকায় কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলাদেশি নারীদের মধ্যে তাকে প্রথম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।