ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে নতুন ধারা যুক্ত করে অনলাইনে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হলে এক কোটি টাকা জরিমানা ও ১৪ বছরের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সংসদ ভবনে আজ অনুষ্ঠিত ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মুলতবি (৩য় মুলতবি বৈঠক) বৈঠকে এ বিধান যুক্ত করা হয়।
বৈঠকে আইনের ৩, ৫, ১২, ২১ ও ৫৩ ধারায় সংশোধনী আনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ। আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, কমিটির সদস্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে সংসদে উত্থাপিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল নিয়ে সংসদীয় কমিটি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেন। সর্বশেষ বৈঠকে আইনের এসব ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। সবগুলো সংশোধনী এখন একত্রিত করে কমিটি বিলের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করবে। এর আগের বৈঠকে এই বিলের বিতর্কিত ৩২ ধারা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের জন্য ‘ডিজিটাল গুপ্তচর বৃত্তি’ বাদ শব্দ বাদ যাবে। আগামী বৈঠকে বিলটির সুপারিশ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে সংসদীয় কমিটি।
কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় কমিটি বিলে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত অবমাননাকে আইনের এখতিয়ারভুক্ত করেছে। বিলের ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে কোন ধরনের প্রপাগান্ডা প্রতারণার দন্ডের বিধান রয়েছে। এর সঙ্গে কমিটি জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতও সন্নিবেশ করছে। বিলে এই অপরাধে এক কোটি টাকা জরিমানা ও ১৪ বছরের জেলের বিধানের প্রস্তাব করেছে।
এছাড়া সংসদীয় কমিটি বিলের একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি গঠনের পরিবর্তে নতুন করে দুইজন পরিচালক যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ১২ ধারায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের যে বিধান রয়েছে সেখানে বিএফইউজের একজন প্রতিনিধি যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। আর মামলা নিষ্পত্তি ১৮০ দিনের স্থলে ১৮০ কার্যদিবস ও ওই সময় নিষ্পিত্তি না হলে নতুন করে ৯০ দিনের যে বিধান রয়েছে সেটাকে ৯০ কার্যদিবস করার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব সিদ্ধান্ত বিগত দ্বিতীয় মুলতবি বৈঠকের। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগের আরেকবার সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বসবে কমিটি।
সংশোধনীতে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন কিনা সংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমেদ বলেন, তাদের চহিদা মোতাবেক যতটা সম্ভব অ্যাডজাস্ট করেছি। তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য তো আমরা সব কিছু বিসর্জন দিতে পারি না। তবে এটা বলতে পারি তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটিতে আমরা সুন্দর করতে পেরেছি।