আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের এই দিনে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধ সামনে রেখে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল গঠন করেন।
দীর্ঘ ৪০ বছরে সংঘাত-বিক্ষোভ, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দলটি একাধিকবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে বিএনপি। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন দল বিএনপি।
প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন সময় বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও বারবার ঘুরে দাঁড়ায় বিএনপি। কিন্তু এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ে মুখোমুখি হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ রাজনৈতিক দল।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর সহধর্মিণী খালেদা জিয়া ৩৬ বছর ধরে বিএনপির হাল ধরে আছেন। কিন্তু আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে থাকার এই সময়েও তিনি কারাগারে।
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন লন্ডনে প্রবাসী। এমন পরিস্থিতিকে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ ‘নাজুক’ হিসেবে উল্লেখ করলেও দলটির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো—দেশের অন্যতম বড় দল আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এখনো বিএনপিই।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ মনে করেন, অনেক প্রতিকূল অবস্থা সত্ত্বেও বিএনপিকে কেউ ভাঙতে পারেনি। দলটি এ দেশে এখনো ক্ষমতার রাজনীতিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। বিএনপির জন্য এটি অনেক বড় সফলতা। তবে আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করাটা বিএনপির সামনে এই মুহূর্তে প্রধান চ্যালেঞ্জ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে বিএনপি বিচ্যুত হয়েছে—এ কথা না বলে কখনো কখনো হোঁচট খেয়েছে বলা যায়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতে, বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য বহু বছর ধরে যারা চেষ্টা করে আসছে; দলটির ৪০ বছর পূর্তি তাদের জন্য নতুন একটি বার্তা। এই দলের বিরুদ্ধে বহু ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তবে দল ফিনিক্স পাখির মতো আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শে অবিচল না থাকলে অন্য অনেক দলের মতো বিএনপিও হারিয়ে যেত। কিন্তু এক যুগ ধরে চরম অন্যায়-অত্যাচার ও নিপীড়নের পরও বিএনপি টিকে আছে; এটাই বাস্তবতা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মহাসচিব তাঁর বাণীতে বলেন, একদলীয় শাসনের এই দুঃসময়ে বিএনপিকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে শপথ নিতে হবে। বর্তমান সময়ে জনগণকে সংগঠিত করার বিকল্প নেই। বারবার অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে যিনি মুক্ত করেছেন সেই অবিসংবাদিত দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিহিংসামূলক জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সৌজন্যে ঃ দ্য ডেইলি অবজারভার অনলাইন