বান্দরবান সরকারি হাসপাতালে এনেসথেসিয়া মেশিন নষ্ট, জরুরি অপারেশন বন্ধ

বান্দরবান সরকারি হাসপাতালে প্রায় ১৫ বছর আগে সরবরাহ করা এনেসথেসিয়া মেশিন।

এনেসথেসিয়া মেশিন (অবশকরণ যন্ত্র) নষ্ট থাকায় বান্দরবান সরকারি হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস ধরে জরুরি সার্জিক্যাল অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রসূতি নারীদের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রসব করানো যাচ্ছেনা। অন্যান্য রোগীদেরও যেসব ক্ষেত্রে অবশ করে অপারেশন করতে হয় সেইসব সেবাও দেয়া যাচ্ছেনা।

হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে দুইটি এনেসথেসিয়া মেশিনের একটি অনেক আগে থেকেই বিকল হয়ে আছে। অন্যটি বারবার নষ্ট হলেও এতোদিন মেরামত করে করে কাজ চালানো হচ্ছিলো। এখন সেই মেশিনটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রত্যুষ পল ত্রিপুরা জানান, আগষ্ট মাসের শুরুর দিকে এনেসথেসিয়া মেশিনটি নষ্ট হয়েছে। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

তিনি আরো জানান, হাসপাতালের এনেসথেসিয়া মেশিনগুলো প্রায় ১৫ বছর আগে সরবরাহ করা। প্রসূতি মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশনসহ অন্যান্য অপারেশনের ক্ষেত্রেও মেশিনগুলো ব্যবহার করতে হয়।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে মেশিন দু’টি অচল পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর মধ্যে ইতালিতে তৈরি ডাটেক্স ওমেডা ব্র্যান্ডের মেশিনটির অবস্থা খুবই নাজুক। বিভিন্ন জায়গায় মরিচা পড়া মেশিনটি কবে থেকে নষ্ট হয়ে আছে তা সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসা সহকারিরা বলতে পারেননি।

অচল পড়ে থাকা ডায়াথার্মি মেশিন।

অন্য মেশিনটি তুরস্কের তৈরি এএমএস ব্র্যান্ডের। যেটি মাস দেড়েক আগে থেকে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অপারেশনের কাটা জায়গা থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করার ডায়াথার্মি মেশিনটিও নষ্ট হয়ে আছে অনেক আগে থেকে।

সিভিল সার্জন ডা. অং সুই প্রু বলেন, নতুন এনেসথেসিয়া মেশিন এবং হাসপাতালের আরো বেশ কিছু যন্ত্রপাতির চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি মন্ত্রণালয় খুব শীঘ্রই এসব যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দেবে।

ইউনিসেফ-এর অর্থায়নে পরিচালিত ‘নারীবান্ধব হাসপাতাল কর্মসূচি’র বান্দরবান জেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের সভানেত্রী ডনাইপ্রু নেলী। তিনি বলেন, জেলার সরকারি হাসপাতালের একমাত্র এনেসথেসিয়া মেশিনটি অচল হয়ে পড়ায় প্রসূতি নারীরা খুবই অসুবিধায় পড়েছেন। পাহাড়ি এলাকার অনেক দুস্থ নারীর পক্ষে এই খরচ বহন করা সম্ভব নয়। কয়েকদিন আগেও আমরা এরকম এক নারীর জন্যে চাঁদা তুলে বেসরকারি হাসপাতালে প্রসবের ব্যবস্থা করেছি।

সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয় বিনামূল্যে। বান্দরবান শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে একেকজন রোগীর খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।

শেয়ার করুন