বান্দরবানে চাকরির ভূয়া প্রত্যয়নপত্র দেওয়ায় অভিযুক্ত সেই উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুর আহমেদের বিরুদ্ধে এবার চেক প্রতারণার মামলা হয়েছে। মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পে চাকরি দেবার নাম করে ঋণের জালে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই নারীর।
বান্দরবান সদরের মেহেরুন নেছা নামের এক নারী ১ নভেম্বর রবিবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুজাহিদুর রহমান-এর আদালাতে এ মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলাটিতে বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারি পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ ও তার স্ত্রী হ্লা সিং দাই মারমাসহ তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আবু জাফর মামলার তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী মেহেরুন নেছা অভিযোগ করে বলেন, আসামীরা বিভিন্নভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে একটি ঋণের জামিনদার বানায়। পরে ওই ঋণের যাবতীয় কাগজপত্র ভূয়া প্রমাণিত হয়। এতে জামিনদার হিসাবে আমি ঝুঁকিতে পড়েছি।
এছাড়া আসামী হ্লা সিং দাই মারমার কাছ থেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সেই টাকা ফেরত দেবার পরও আমার কাছ থেকে জামানত হিসাবে নেওয়া খালি চেকে ১০ লক্ষ টাকা লিখে উত্তোলনের চেষ্টা করেছে তারা। পরে ব্যর্থ হয়ে আমার নামে মামলাও করেছে।
এ বিষয়ে জানতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারি পরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
প্রসঙ্গতঃ মঞ্জুর আহমেদ ২০০৭ সালে বান্দরবান জেলার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোতে অফিস সহকারি হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সহকারি পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী হ্লাসিং দাইয়ের সহযোগিতায় সূদের মহাজনী কারবার, চাকরি দেবার নামে বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, প্রকল্প পাইয়ে দেবার জন্যে বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায় এবং অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে প্রকল্পের শিক্ষকদের বেতন ভাতার টাকা কর্তনসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।
সম্প্রতি এসব অপকর্মে বান্দরবানের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনিও মঞ্জুর আহমেদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের কাছে তদবির করে বেড়াচ্ছেন বলে বান্দরবানের একাধিক সংবাদকর্মী নিশ্চিত করেছেন।