বান্দরবান জেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংকট, ২০২৫
জাতীয় ফল বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার গভীর বিশ্লেষণ
১. পরিচিতি ও নির্বাহী সারসংক্ষেপ
এই প্রতিবেদনটি ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে বান্দরবান জেলার শিক্ষাব্যবস্থার একটি বিশদ বিশ্লেষণ ও কাঠামোগত সমালোচনার ওপর আলোকপাত করে। এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত বান্দরবান জেলার সমস্ত পরিসংখ্যান সরাসরি বান্দরবানের জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত)-এর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত ফলাফল শীট থেকে নেওয়া হয়েছে 1। ফলাফল প্রকাশের পর জাতীয় পর্যায়ে যে ফল বিপর্যয় লক্ষ করা গেছে, তার তীব্রতা বান্দরবান জেলায় ছিল আরও ভয়াবহ, যা জেলার কাঠামোগত দুর্বলতাকে উন্মোচিত করেছে।
১.১. ফল বিপর্যয়: জাতীয় প্রবণতা এবং বান্দরবান জেলার তীব্রতা
২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার (৫৮.৮৩ শতাংশ) প্রকাশ করেছে, যা জাতীয়ভাবে ‘ফল বিপর্যয়’ হিসেবে চিহ্নিত 2। শিক্ষাবিদ ও বোর্ড কর্মকর্তারা এই ফলাফলকে খাতা মূল্যায়নে নমনীয়তা পরিহার করার ফলস্বরূপ ‘বাস্তব ফলাফল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন 2।
জাতীয় এই কঠোরতার বিপরীতে, বান্দরবান জেলার সামগ্রিক পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৭.৬৬ শতাংশ 7। জেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কলেজ, মাদ্রাসা ও টেকনিক্যাল শিক্ষাসহ মোট ৪,০৭১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১,৫৩৩ জন 1। জেলার পাসের এই হার জাতীয় হারের তুলনায় ২১.১৭ শতাংশ কম, যা জেলার শিক্ষাব্যবস্থার অভ্যন্তরে দীর্ঘকাল ধরে পুষে রাখা গভীর কাঠামোগত দুর্বলতাকে উন্মোচিত করেছে। গত বছরের তুলনায় জেলায় পাসের হার ২২.০২ শতাংশ কমেছে 7। এই তীব্র পতন প্রমাণ করে যে স্থানীয় শিক্ষা মান কঠোর মূল্যায়নের সামনে সুস্পষ্টভাবে ভেঙে পড়েছে।
১.২. মূল অনুসন্ধানের সারসংক্ষেপ
এই প্রতিবেদনের প্রধান অনুসন্ধানগুলি জেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাসংকটের মূল কারণগুলি চিহ্নিত করে:
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক বৈষম্য: জেলার বৃহত্তম সরকারি কলেজ (বান্দরবান সরকারি কলেজ) মাত্র ২৮.৯৬ শতাংশ পাস হার নিয়ে চরম হতাশাজনক ফলাফল করেছে 1। এর বিপরীতে, কঠোর তদারকি ও উন্নত সম্পদযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলি (যেমন কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ) ১০০ শতাংশ পাস দেখিয়েছে 1।
- কাঠামোগত সমস্যা: শিক্ষক সংকট, বিশেষত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে, শিক্ষার গুণগত মানের অভাব, এবং দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান বান্দরবানের শিক্ষার মৌলিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে 7।
- নীতিগত পদক্ষেপ: সরকার প্রযুক্তিভিত্তিক সমতা আনতে স্টারলিংক ইন্টারনেট সংযোগ 9 এবং হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে 10। তবে, এই প্রযুক্তিগত সমাধানগুলি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষ শিক্ষক এবং আইনি সংস্কারের অভাব একটি বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে 11।
২. জাতীয় প্রেক্ষাপটে এইচএসসি ২০২৫: ফল বিপর্যয়ের কাঠামোবদ্ধ বিশ্লেষণ
২.১. বিগত ২০ বছরের ইতিহাসে পাসের হারের নিম্নগামিতা ও বাস্তব ফল প্রত্যাবর্তনের বিতর্ক
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল বিগত দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে 2। গত বছর এই হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ 2। মোট পরীক্ষার্থীর ৪১.১৭ শতাংশই (৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন) ফেল করেছেন 3। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪ সালের পর এই প্রথম পাসের হার এত নিচে নামল 2।
এই ফলাফল বিপর্যয়ের মূল কারণ হিসেবে শিক্ষাবিদরা শিক্ষাব্যবস্থার গলদ এবং দীর্ঘদিনের কৃত্রিমভাবে ভালো ফল দেখানোর প্রবণতাকে দায়ী করেছেন 2। বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের দাবি, পূর্ণ সিলেবাস, পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ের ওপর পরীক্ষা নেওয়ার কারণে এই ফলই ‘বাস্তবতা’ তুলে ধরেছে 2। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান এই মতের সমর্থন করে বলেন, “আগে অনেকেই ৩০ বা ৩১ নম্বর পেলে বিশেষ বিবেচনায় পাশ করিয়ে দেওয়ার রীতি ছিল, যা এবার পরিহার করা হয়েছে,” এবং এমন নমনীয়তা জাতির জন্য ক্ষতিকর ছিল 2।
২.২. বান্দরবান জেলা ও জাতীয় ফলাফলের তুলনামূলক পর্যালোচনা (সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ)
জাতীয়ভাবে যখন গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, তখন বান্দরবান জেলার সামগ্রিক পাসের হার মাত্র ৩৭.৬৬ শতাংশ 7। বান্দরবানের এই হার জাতীয় হারের তুলনায় ২১.১৭ শতাংশ কম। এই বিশাল পার্থক্য পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা অবকাঠামো, মানবসম্পদ সংকট এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার গভীরতাকে নির্দেশ করে। চট্টগ্রাম বোর্ডের (যার অধীনে বান্দরবান পড়ে) পাসের হারও ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে 13, যা আঞ্চলিক নিম্নমুখী প্রবণতাকে সমর্থন করে। তবে, বান্দরবানের ফলাফল পতনের তীব্রতা (গত বছরের তুলনায় ২২.০২ শতাংশ কম) প্রমাণ করে যে জেলার শিক্ষাব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে জাতীয় গড় থেকে অনেক বেশি দুর্বল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল, যা জাতীয় কঠোরতার সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছে 7।
৩. বান্দরবান জেলার এইচএসসি ফলাফল, ২০২৫: পরিসংখ্যানগত ধস ও বিশদ বিশ্লেষণ
৩.১. সামগ্রিক ফলাফলের সংখ্যাভিত্তিক উপস্থাপন: পাসের হার ও জিপিএ-৫-এর আশঙ্কাজনক পতন
জেলা শিক্ষা অফিসারের দপ্তর থেকে প্রাপ্ত ফলাফল শীট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় বান্দরবান জেলায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা উভয় ক্ষেত্রেই চরম ধস দেখা দিয়েছে 1। কলেজ, মাদ্রাসা (আলিম) ও টেকনিক্যাল মিলিয়ে মোট ৪ হাজার ৭১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
বান্দরবান জেলার সামগ্রিক এইচএসসি ফলাফল (২০২৫)
বিবরণ | ২০২৫ সাল (প্রাপ্ত তথ্য) | ২০২৪ সাল (তুলনা) | পরিবর্তনের হার | সূত্র |
মোট পরীক্ষার্থী | ৪,০৭১ জন | – | – | 7 |
কৃতকার্য পরীক্ষার্থী | ১,৫৩৩ জন | – | – | 7 |
পাসের হার | ৩৭.৬৬% | ৫৯.৬৮% | ২২.০২% পতন | 7 |
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত | ৯৪ জন | ১৭৭ জন | প্রায় ৪৭% পতন | 7 |
কলেজ পর্যায়ে মোট পরীক্ষার্থী ৩,৮৭১ জন 1। এদের মধ্যে পাস করেছে ১,৩৯৪ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৩ জন 1। অন্যদিকে, মাদ্রাসা (আলিম) পর্যায়ে ১২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৪ জন পাস করেছে (পাসের হার ৮৪.৫৫%) এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১ জন 1। এই পরিসংখ্যানগুলো জেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদী সংকটের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ 7।
৩.২. ফল পতনের স্থানীয় কারণসমূহ ও বিশ্লেষণ
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা এই ফলাফল পতনের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু কারণকে দায়ী করেছেন 7:
১. শিক্ষকের চরম সংকট ও মানসম্মত শিক্ষকের অভাব: সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের শূন্যপদ পূরণে ব্যর্থতা এবং মানসম্মত শিক্ষকের স্বল্পতা একটি মৌলিক কারণ 7।
২. শিক্ষকদের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতা: কিছু শিক্ষকের শিক্ষার প্রতি অবহেলা পাঠদানের গুণগত মানকে হ্রাস করেছে 2।
৩. অভিভাবকদের নজরদারির অভাব: দারিদ্র্য এবং আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানদের পড়ালেখার প্রতি পর্যাপ্ত মনোযোগ দিতে পারেন না 7।
৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি: শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করায় পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে 7।
বান্দরবানের মূল দুর্বলতা হলো মানবসম্পদ ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণহীনতা 7। শিক্ষক সংকট বান্দরবানের একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা 8। এই তীব্র পতন কেবল কঠোর মূল্যায়নের ফল নয়, বরং স্থানীয় প্রশাসনিক বিপর্যয় যা একটি নতুন, কঠোর মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
৪. বান্দরবান জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মক্ষমতা ও সমালোচনা
বান্দরবানের ফলাফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে চরম বৈষম্য দেখা গেছে, যা জেলার শিক্ষাব্যবস্থার দ্বৈত চরিত্র তুলে ধরে—একদিকে সম্পদ ও তদারকিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সাফল্য, অন্যদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক নৈরাজ্য।
৪.১. প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য: ব্যতিক্রমী কর্মক্ষমতার কারণসমূহ
জেলার তিনটি প্রতিষ্ঠান ব্যতিক্রমী ফলাফল দেখিয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম | উপজেলার নাম | মোট পরীক্ষার্থী | পাসের হার (%) | জিপিএ-৫ প্রাপ্ত |
কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ | লামা | ৬২ | ১০০% | ৩১ |
আলীকদম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ | আলীকদম | ৬৭ | ৯৮.৫০% | ০৯ |
বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ | বান্দরবান সদর | ২১০ | ৯৮.০৯% | ২৫ |
কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ শতভাগ পাসের মাধ্যমে এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে (৩১ জন) জেলার মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে 7। ক্যান্টনম্যান্ট-কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিও উচ্চ পাসের হার দেখিয়েছে 1। এই প্রতিষ্ঠানগুলির সাফল্য প্রমাণ করে যে পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, যদি পর্যাপ্ত সম্পদ, প্রশিক্ষিত শিক্ষক, কঠোর জবাবদিহিতা, এবং নিয়মিত তদারকি বজায় রাখা যায়, তবে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব 7। এই প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় শিক্ষক সংকট এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পেরেছে।
৪.২. দুর্বল ফলাফলের প্রতিষ্ঠান ও হতাশার ক্ষেত্রসমূহ
৪.২.১. বৃহত্তম সরকারি কলেজের নিম্নমুখী পারফরমেন্স ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা
জেলার বৃহত্তম এবং প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বান্দরবান সরকারি কলেজ-এর ফলাফল হয়েছে সবচেয়ে হতাশাজনক। ফলাফল শীট অনুযায়ী, এই কলেজ থেকে ১ হাজার ১৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল, যার মধ্যে মাত্র ৩৪০ জন পাস করেছে 1। তাদের পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮.৯৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৬ জন 1।
এই ফলাফল চরম হতাশার জন্ম দিয়েছে এবং এটি কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যর্থতা নয়, বরং এই কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণহীনতা ও চরম ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করে তোলে 7। যেখানে জেলার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল, সেখানে এমন নিম্ন পারফরমেন্স বান্দরবান জেলার শিক্ষা মান উন্নয়নে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত।
এছাড়াও অন্যান্য কলেজের ফলাফল নিম্নরূপ 1:
- বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজ: পাসের হার ২৬.৫৩% (জিপিএ-৫: ০২ জন)
- হাজি এম এ কালাম সরকারি ডিগ্রী কলেজ (নাইক্ষ্যংছড়ি): পাসের হার ২৫.৭৯% (জিপিএ-৫: ০ জন)
- রুমা সাঙ্গু কলেজ (রুমা): পাসের হার ৪.৮% (পাস করেছে ৬ জন, জিপিএ-৫: ০ জন)—যা জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন এবং শিক্ষাব্যবস্থায় চরম উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
৪.২.২. মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার ভূমিকা ও চ্যালেঞ্জ
প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, মাদ্রাসা (আলিম) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি তুলনামূলকভাবে ভালো ফল করেছে। ১২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৪ জন কৃতকার্য হয়েছে, অর্থাৎ পাসের হার প্রায় ৮৪.৫৫ শতাংশ 1। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা মাত্র একজন 1। অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ৭৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ জন পাস করেছে (পাসের হার ৪৫.৪৫ শতাংশ) 1। গুণগত মানের দিক থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কম।
৫. গণমাধ্যম ও শিক্ষাবিদদের চোখে ফল বিপর্যয়
৫.১. জাতীয় গণমাধ্যমে ফলাফলের বিশ্লেষণ ও শিক্ষাবিদদের বক্তব্য
১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত ফলাফল নিয়ে জাতীয় গণমাধ্যম ও শিক্ষাবিদরা গভীর বিশ্লেষণ করেছেন 3। জাতীয় মিডিয়াতে ফল বিপর্যয়ের জন্য মূলত খাতা মূল্যায়নে নমনীয়তা পরিহার করে ‘বাস্তবতা’ ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে 2। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের মতে, এই ফল শিক্ষাব্যবস্থার ‘বাস্তব’ চিত্র 2।
শিক্ষাবিদরা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে ভালো ফল দেখানোর মাধ্যমে শিক্ষার প্রকৃত সংকট আড়াল করা হয়েছিল 2। অধিকাংশ শিক্ষকের পাঠদানের মান ভালো নয়, এবং সরকারি-বেসরকারি কলেজে শিক্ষার প্রতি অবহেলার সামগ্রিক প্রভাব এইচএসসির ফলাফলে পড়েছে 2। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক দীপক দাস বলেছেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা ঠিকভাবে ক্লাস নেন না, আর সরকারি কলেজে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে পড়াশোনার মান কমে গেছে 2।
৫.২. আঞ্চলিক গণমাধ্যমে বান্দরবান ও পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা
আঞ্চলিক গণমাধ্যমগুলি বান্দরবানের ‘এইচএসসি ফলাফলে ধস’-কে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে প্রচার করেছে 7। বিশ্লেষকরা এই ধসের জন্য সরাসরি শিক্ষক সংকট, মানসম্মত শিক্ষকের অভাব, অভিভাবকীয় অসচেতনতা, এবং শিক্ষার্থীদের অনলাইন আসক্তিকে দায়ী করেছেন 7। এই আলোচনায় পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্গমতা এবং অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলিও উঠে এসেছে।
৬. বান্দরবানের শিক্ষামান উন্নয়নে নীতিগত বক্তব্য ও বিশেষজ্ঞ মতামত
বান্দরবান জেলার শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন স্তরের নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ও মতামতে প্রতিফলিত হয়েছে।
বক্তা/বিশেষজ্ঞ | মূল বক্তব্য/মতামত | সময়কাল (সূত্রসহ) | প্রাসঙ্গিকতা ও বিশ্লেষণ |
বীর বাহাদুর উশৈসিং, পার্বত্য মন্ত্রী | বান্দরবান জেলা শিক্ষাক্ষেত্র আর পিছিয়ে নেই; কলেজ সংখ্যা ২ থেকে ১৪-এ উন্নীত হয়েছে এবং শিক্ষাবৃত্তি বাড়ানো হবে। | এপ্রিল ১১, [সময়কাল- সম্ভবত ২০২৪] (চট্ট টাইমস) 14 | কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি একটি ইতিবাচক পরিমাণগত উন্নয়ন। তবে ২০২৫ সালের মাত্র ৩৭.৬৬ শতাংশ পাস হার প্রমাণ করে যে এই প্রাতিষ্ঠানিক বিস্তার গুণগত মান এবং শিক্ষক-সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। |
অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান | আদিবাসীদের উন্নয়নে গৃহীত কর্মসূচিতে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। | [সময়কাল উল্লেখ নেই] (প্রথম আলো) 15 | উচ্চ পর্যায়ের এই স্বীকারোক্তিটি ইঙ্গিত দেয় যে পার্বত্য এলাকার শিক্ষা সহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য সম্পদ বরাদ্দ হলেও, সমন্বিত ও কৌশলগত বাস্তবায়ন পদ্ধতির অভাবে তা কার্যকর ফল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। |
জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন | শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা এবং সকলের পরামর্শ গ্রহণ। | মে ২৯, [সময়কাল- সম্ভবত ২০১৭] (সিভয়েস২৪) 16 | স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও ফল বিপর্যয় প্রমাণ করে যে নিয়মিত মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর কৌশল এবং ধারাবাহিক প্রশাসনিক পদক্ষেপের রূপ নিতে পারেনি। |
৬.২. প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা ও সমতা আনয়নে গৃহীত/প্রস্তাবিত উদ্যোগ
অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা উন্নয়নে প্রযুক্তিকে ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের ১০০টি স্কুলে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সুবিধা চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন 17। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো ই-লার্নিং, আধুনিক শিক্ষার সুযোগ এবং শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার মানে সমতা নিশ্চিত করা 17।
প্রধান উপদেষ্টা ভার্চুয়াল পড়াশোনা চালুর ক্ষেত্রে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ স্বীকার করেছেন: দুর্গম এলাকায় বিদ্যুতের ঘাটতি, ইন্টারনেট সংযোগের অভাব এবং দক্ষ শিক্ষকের অভাব 11। তিনি সোলার প্যানেল, স্টারলিংক এবং দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতি মোকাবিলায় চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন 11। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও উল্লেখ করেন, কোটার ওপর নির্ভরতা কমাতে হলে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে ‘ভালো স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে হবে’ এবং এর জন্য স্যাটেলাইট শিক্ষাব্যবস্থা ও হোস্টেল নির্মাণ অপরিহার্য 17।
প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান (স্টারলিংক) দুর্গমতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি প্রশংসনীয় এবং অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ। তবে, কেবল সংযোগ দিলেই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে না। মূল চ্যালেঞ্জ হলো দক্ষ শিক্ষক ও স্থানীয়ভাবে বিষয়বস্তু তৈরি করার সক্ষমতা 11।
৭. বান্দরবান শিক্ষা ব্যবস্থার মৌলিক সংকট
বান্দরবান জেলার শিক্ষা সংকট বহুমুখী, যেখানে ভৌগোলিক প্রতিবন্ধকতা, প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতা এবং মানবসম্পদ সংকট মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। এই বিশ্লেষণটি পাহাড়ি বা বাঙালি কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পক্ষ না নিয়ে, নিরপেক্ষভাবে কাঠামোগত দুর্বলতার ওপর জোর দেয়।
৭.১. শিক্ষক সংকট ও শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্বল ভিত্তি
পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নেই, বিশেষ করে বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা ও সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে 19। লংগদুর মতো দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবে পাঠদান ব্যাহত হয়, এবং বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকের অভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ স্তরে বিজ্ঞান পড়তে উৎসাহ পেলেও পরে কমার্সে বা আর্টসে ভর্তি হতে বাধ্য হয় 19। দুর্বল প্রাথমিক ভিত্তি নিয়ে উচ্চ স্তরে পৌঁছানো শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পিছিয়ে থাকে। এই দুর্বল ভিত্তি এবং শিক্ষকের চরম ঘাটতির ফলস্বরূপ, পাহাড়ে প্রাথমিক স্তর শেষে প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু এবং মাধ্যমিক স্তরে ভর্তির পরেও এসএসসি পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে, যা সমতলের গড়ের চেয়ে অনেক বেশি 20।
৭.২. দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও শিক্ষায় সমতা
পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান এবং দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা শিক্ষকের উপস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা কঠিন করে তোলে 8। বান্দরবানের ৫টি উপজেলার (সদর, রোয়াংছড়ি, থানচি, আলীকদম, এবং রুমা) শিক্ষার্থীদের গাণিতিক সাক্ষরতার হার দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সবচেয়ে পিছিয়ে আছে 22। ভৌগোলিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও, আবাসিক ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করা হলেও এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি 8।
৭.৩. আইন ও নীতি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ (পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং এনটিআরসিএ আইন)
পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষাসংকটের গভীরে রয়েছে আইনি ও প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭-এর আলোকে মাধ্যমিক শিক্ষাকে সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত করার কথা থাকলেও, এই বিষয়ে কার্যকর প্রশাসনিক পদক্ষেপ এখনো শুরু হয়নি 8। এর ফলে মাধ্যমিক শিক্ষায় বিরাজমান সমস্যাবলি স্থানীয় বাস্তবতার নিরিখে সমাধান করা যাচ্ছে না।
এছাড়াও, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর নিয়োগ নীতিমালা পার্বত্য অঞ্চলের প্রযোজ্য আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় 8। এনটিআরসিএর ‘নিবন্ধন পাস’ শর্তটি পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির জন্য শিক্ষক নিয়োগে জটিলতা সৃষ্টি করছে। এই প্রশাসনিক বাধা দূর না হলে এবং ক্ষমতা সঠিকভাবে স্থানীয় জেলা পরিষদে হস্তান্তর না হলে, ফলাফল উন্নয়নের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য।
৮. বান্দরবান জেলা শিক্ষামান উন্নয়নে কৌশলগত সুপারিশমালা
বান্দরবান জেলায় শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ২০২৫ সালের ফল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।
৮.১. স্বল্পমেয়াদী প্রশাসনিক ও একাডেমিক ব্যবস্থা
১. শিক্ষক শূন্যপদ পূরণ ও জবাবদিহিতা: বান্দরবান সরকারি কলেজের মতো প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে জরুরি ভিত্তিতে বিজ্ঞান, গণিত এবং ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষকদের শূন্যপদ পূরণ করতে হবে 7। একই সাথে শিক্ষক-কর্মচারীদের কঠোর জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে 2।
২. বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ: পার্বত্য অঞ্চলের স্থানীয় প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে এনটিআরসিএর শর্ত শিথিল করে অথবা পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে 8।
৩. শিক্ষার্থীর জন্য ক্র্যাশ প্রোগ্রাম: উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে বিশেষ ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ বা সাপ্লিমেন্টারি কোচিং শুরু করা, যাতে তারা দ্রুত ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
৮.২. মধ্যমমেয়াদী কাঠামোগত সংস্কার ও বিনিয়োগ
১. হোস্টেল নির্মাণ ও প্রযুক্তিগত সমন্বয়: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টার প্রস্তাবিত স্যাটেলাইট শিক্ষাব্যবস্থা (স্টারলিংক) আগামী ছয় মাসের মধ্যে দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা 17। একই সঙ্গে প্রতিটি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ছাত্রাবাস ও হোস্টেল নির্মাণ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা নিরবচ্ছিন্নভাবে আধুনিক শিক্ষা লাভ করতে পারে 10।
২. শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি: বিদ্যমান শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত এবং মানসম্মত পেশাগত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের নতুন শিক্ষণ পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা আবশ্যক 7।
৩. কারিগরি শিক্ষার জোরদারকরণ: পার্বত্য অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা (যেমন বাঁশ চাষ, কাজু বাদাম, পশুপালন) মাথায় রেখে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আরও শক্তিশালী এবং স্থানীয়ভাবে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে হবে 17।
৮.৩. দীর্ঘমেয়াদী সমতাভিত্তিক ও টেকসই শিক্ষা নীতি প্রণয়ন
১. পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন কার্যকরকরণ: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে মাধ্যমিক শিক্ষার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে সম্পূর্ণরূপে এবং কার্যকরভাবে হস্তান্তর করা জরুরি। কেন্দ্র ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যেকার আইনি সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে 8।
২. ভাষা ও সংস্কৃতি সংবেদনশীল শিক্ষা: স্থানীয় সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি সংবেদনশীলতা বজায় রেখে শিক্ষণ উপকরণ ও পদ্ধতি চালু করা 21।
৩. নিরপেক্ষ গবেষণা: কেন বান্দরবানের মতো জেলাগুলোতে ফল বিপর্যয়ের তীব্রতা জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি হলো, তা নিয়ে একটি নিরপেক্ষ গবেষণা সংস্থা দিয়ে গভীর পর্যালোচনা ও গবেষণা করা প্রয়োজন 2।
সূত্রসমূহ:
- এচই-এস-সি-২০২৫-এর-রেজাল্ট (বান্দরবান জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়)
- এইচএসসিতে দুই দশকের সবচেয়ে নিম্ন ফলাফল, বোর্ডের দাবি রিয়েল ফলাফল, accessed October 16, 2025, https://dhakamail.com/education/260983
- এবার এইচএসসিতে ফেল ৫ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী – Dhakatimes24, accessed October 16, 2025, https://www.dhakatimes24.com/2025/10/16/395107
- এইচএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ – Kaler Kantho, accessed October 16, 2025, https://www.kalerkantho.com/online/national/2025/10/16/1592390
- এইচএসসি ও সমমানে অকৃতকার্য ৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী – Kaler Kantho, accessed October 16, 2025, https://www.kalerkantho.com/online/national/2025/10/16/1592408
- ২০ বছরের ইতিহাসে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন ফল, যা বলছেন বিশ্লেষকরা – Jagonews24, accessed October 16, 2025, https://www.jagonews24.com/education/news/1059956
- বান্দরবানে এইচএসসি ফলাফলে ধস – Dhaka Mail, accessed October 16, 2025, https://dhakamail.com/country/260985
- সমস্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষা: অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা, accessed October 16, 2025, https://sarabangla.net/opinion/free-opinion/post-905223/
- পার্বত্য চট্টগ্রামের ১০০ স্কুলে শিগগির স্টারলিংক ইন্টারনেট চালু – Jagonews24, accessed October 16, 2025, https://www.jagonews24.com/education/news/1042661
- ৬ মাসে স্টারলিংকের ইন্টারনেট পাবে পাহাড়ের ১০০ স্কুল: পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা, accessed October 16, 2025, https://www.prothomalo.com/education/lfk4w6m6f6
- পার্বত্য চট্টগ্রামের একশ স্কুলে এবছরই ই-লার্নিং চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার। – কক্স ২৪ নিউজ, accessed October 16, 2025, https://www.cox24news.com/2025/07/02/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%B6/
- পার্বত্য-চট্টগ্রামের-একশ-স্কুলে-এবছরই-ই-লার্নিং-চালুর-নির্দেশ-প্রধান-উপদেষ্টার, accessed October 16, 2025, https://cao.gov.bd/site/news/c08205e0-1511-4fc2-89d0-801b67ba2b83/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%B6-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A6%87-%E0%A6%87-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%82-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0
- চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬ বছরে পাসের হার সর্বনিম্ন, কমেছে জিপিএ ৫ – Kaler Kantho, accessed October 16, 2025, https://www.kalerkantho.com/online/campus-online/2025/10/16/1592467
- বান্দরবানে সাতশোর বেশি শিক্ষার্থী পেলো উন্নয়ন বোর্ড শিক্ষা বৃত্তি – Chttimes.com, accessed October 16, 2025, https://www.chttimes.com/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%B6%E0%A7%8B%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%B6/
- আদিবাসীরা এখনো পিছিয়ে – প্রথম আলো, accessed October 16, 2025, https://www.prothomalo.com/bangladesh/%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%8F%E0%A6%96%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87
- বান্দরবানে শিক্ষার মান উন্নয়নে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত – Cvoice24.com, accessed October 16, 2025, https://www.cvoice24.com/coxs-bazar/news/5309
- পার্বত্য চট্টগ্রামের ১০০টি স্কুলে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সুবিধা, accessed October 16, 2025, https://deshibarta.com/100ti-schoole-starlink-internet-suvhidha/
- পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং নিশ্চিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্টারলিংক চালু করবে সরকার | শিরোনাম | বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) – BSS, accessed October 16, 2025, https://www.bssnews.net/bangla/news-flash/222902
- পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষক সংকট কাটবে না? – SAMAKAL, accessed October 16, 2025, https://samakal.com/opinion/article/196817/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A6%9F-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9F%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE
- পাহাড়ে প্রাথমিকের পর ঝরে পড়ে ৪০ শতাংশ শিশু – প্রথম আলো, accessed October 16, 2025, https://www.prothomalo.com/education/i7212puq4q
- পার্বত্য এলাকায় শিশু শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা – শিক্ষক বাতায়ন, accessed October 16, 2025, https://www.teachers.gov.bd/blog/details/811480
- বান্দরবানে শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার শীর্ষক সেমিনার – Dhaka Post, accessed October 16, 2025, https://www.dhakapost.com/education/162473
- পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা, জীবনমান ও পরিবেশের উন্নয়নই মূল লক্ষ্য: পার্বত্য উপদেষ্টা – BSS, accessed October 16, 2025, https://www.bssnews.net/bangla/interview/193910
লেখক: ফরিদুল আলম সুমন, সাংবাদিক।
(এই রিপোর্টের তথ্য সংগ্রহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। উল্লিখিত সূত্রগুলোর দায় সংশ্লিষ্টদের কার্যপরিধির আওতাভুক্ত। লেখক এখানে কোনো তথ্য তৈরি করেননি। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ তৈরি করেছেন।)