বান্দরবানে উদ্বোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে বিদ্যালয় ভবনে। প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২০% অতিরিক্ত খরচও ধরা হয়েছিলো এই কাজে। তারপরও থানচি উপজেলার বড়মদক ইউনিয়নে নির্মিত এই বিদ্যালয় ভবনটির কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা ইটসহ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণেই এমনটা হয়েছে বলে ধারনা স্থানীয়দের।
এলজিইডি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পিডিবি-৩ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে জেলার থানচি, নাইক্ষ্যংছড়ি, রোয়াংছড়ি, রুমাসহ বিভিন্ন উপজেলায় দুই তলাবিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের টেন্ডার আহবান করা হয়। তার মধ্যে রেমাক্রী ইউনিয়নের বড়মদক এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে নূর আলম কন্সট্রাকশন। এর মালিক নূরুল আলমের সাথে যৌথভাবে কাজ করছেন রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই রনি এবং শৈক্যচিং মারমা নামের একজন ব্যবসায়ী। কাজটিতে দুর্গমতার কারণে ২০% অতিরিক্ত বরাদ্দ দেবার পরও পিডিবি-৩ প্রকল্পের নির্ধারিত সময় এ বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজটি বুঝিয়ে দিতে পারেননি ঠিকাদার। এর মধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেবে গেছে বিভিন্ন স্থানের মেঝে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদাররা স্থানীয় সাঙ্গু নদীর বালি এবং স্থানীয়ভাবে লাকড়ি দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা ইট দিয়ে দায়সারাভাবে ভবনটি নির্মাণ করেছেন। এটির ভিত্তিতেই সমস্যা আছে। দুর্গমতার কারণে এলজিইডি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সাার্বক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজের তদারকি করতে না পারায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আওয়ামীলীগ নেতা মুইশৈথুই রনি বলেন, নির্মাণ কাজে সাঙ্গু নদীর বালি এবং পাহাড়ে স্থানীয়ভাবে আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা ইট ব্যবহার করা হয়েছে কথাটি সত্যি। তবে সেটির পরিমাণ বেশি নয়। মূলতঃ ঝাংকা খালের উন্নতমানের বালি এবং ইট ভাটা থেকে ক্রয় করা ইটেই বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ করেছি। নতুন ভরানো মাটিতে ফ্লোর করায় এবং সাঙ্গু নদীর বালির কারণে কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং ফ্লোর দেবে গেছে। সেগুলো আমরা ঠিক করে দিবো। প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২০% অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পরও কাজটিতে লোকসান হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) থানচি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসেন জানান, বড়মদক বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালে এবং ফ্লোরে ফাটল দেখা দেয়ার খবর আমরা পেয়েছি। কাজটি এখনো আমরা ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেইনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলেছি কাজটি সঠিকভাবে নির্মাণ করে দেয়ার পর আমরা বুঝে নেবো।
– আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান