বর্ষায় পর্যটক টানতে শুরু হয়েছে বিশেষ ছাড়
বান্দরবানের যেসব জায়গায় ভ্রমণে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই

বান্দরবানের নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের রোমাঞ্চকর দোলনা ‘সুইং এন থ্রিল’। ছবি: জেলা প্রশাসন

বান্দরবানের ৪ উপজেলায় পর্যটকদের যাতায়াতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি- এই চার উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন। খোলা রয়েছে সব হোটেল, রিসোর্ট ও পরিবহন।

জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরি, চিম্বুক, শৈল প্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, প্রান্তিক লেকসহ আশপাশের সবগুলো স্পট খোলা রয়েছে। শহরের হোটেল, রিসোর্টগুলোতেও পর্যটকদের জন্য বিশেষ ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া আরো পড়ুন: ঈদ ও বর্ষায় বান্দরবান ভ্রমণে কোথায় কত ছাড়?
বান্দরবান শহরের নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র।

এ বর্ষা মৌসুমে পর্যটন-আকর্ষণ বাড়াতে জেলা প্রশাসন পরিচালিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের এন্ট্রি-ফিতে ২০% ডিসকাউন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি ১৭ জুন খোলা চোখ ডটকমকে জানান, ঈদুল আযহার ছুটির প্রথম দিন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন পরিচালিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের এন্ট্রি ফি ২০% কমিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গত আড়াই বছরে আমাদের প্রত্যেকটা পর্যটন স্পটে সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী এন্ট্রি ফি কখনোই বাড়ানো হয়নি। মেঘলাতে নামাজ ঘর তৈরি করা হয়েছে, হ্রদে কায়াকিং সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে। প্রত্যেকটা গাছের সাথে নাম, উপকারিতা ইত্যাদি তথ্য সংযোজন করা হয়েছে, যাতে পর্যটকরা বেড়ানোর পাশাপাশি উদ্ভিদ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। নীলাচলে ‘ব্র্যান্ডিং বান্দরবান’ স্যুভেনির শপ, ট্রি হাউজ, জুম ঘর, সুরম্য মসজিদ, ‘সুইং এন্ড থ্রিল’ নামে চমৎকার দোলনা বসানো হয়েছে। পাহাড় চূড়ায় এ ধরনের দীর্ঘ দোলনা বাংলাদেশে সম্ভবতঃ এটাই প্রথম। সব মিলিয়ে ঈদ ও বর্ষায় বান্দরবানের সৌন্দর্যকে পর্যটকদের কাছে আরো উপভোগ্য করে তুলতে ঈদুল আযহার ছুটির প্রথম থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের এন্ট্রি ফি-তে ২০% ডিসকাউন্ট ঘোষণা করা হলো।

নীলাচল সম্পর্কে জানতে পড়ুন: নীলের আঁচল ছুঁয়ে আসুন বান্দরবানের নীলাচল থেকে
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের হ্রদে সংযোজন করা হয়েছে কায়াকিং সুবিধা।

বান্দরবান হোটেল এন্ড রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি অমল কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, যে তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেসব জায়গায় ভ্রমণ করেন মাত্র ১৫ থেকে ২০ ভাগ পর্যটক। বাকি প্রায় ৮০ ভাগ পর্যটক জেলা শহর এবং আশপাশের যেসব জায়গায় ভ্রমণ করেন, সেখানে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। সব ধরনের গণপরিবহন চালু আছে। স্থানীয় প্রশাসনও পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত আছে।

বান্দরবানের বিভিন্ন হোটেল রিসোর্টে এই বর্ষা মৌসুমে ২০ থেকে ৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান সিরাজুল ইসলাম।

বান্দরবানের মেঘলা সম্পর্কে জানতে পড়ুন: কম খরচে বেড়ানোর সেরা জায়গা ‘মেঘলা’
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের নামাজ ঘর।

বান্দরবান জীপ, মাইক্রোবাস, পিকআপ মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি নাছিরুল আলম জানান, জেলা প্রশাসন ও পর্যটনের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সাথে মিল রেখে জুলাই ১ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বর ৩০ তারিখ পর্যন্ত সমিতিভুক্ত পিকআপ (চাঁদের গাড়ি), জীপ ও মাইক্রোবাসে পর্যটকদের জন্য ১০% ডিসকাউন্ট দেওয়া হবে।

নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে ‘ব্র্যান্ডিং বান্দরবান’ নামক স্যুভেনির স্টোরে জেলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলমান থাকায় বান্দরবানের রোয়াংছড়ি,রুমা ও থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। গত ১৫ মার্চ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এগুলো ছাড়া জেলার বাকি ৪ উপজেলার সব পর্যটন কেন্দ্র খোলা রয়েছে।

শেয়ার করুন