বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তৎপরতাসহ রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় সৃষ্ট জন-অসন্তোষের কারণে ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের পার্বত্য তিন জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
গতকাল ৬ অক্টোবর রবিবার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো বার্তায় এ নির্দেশনার কথা জানানো হয়। এদিকে দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রচার হওয়ার পর স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসার সাথে জড়িতরা বলছেন, ২০২০ সালের করোনার বিধিনিষেধ, পরবর্তীতে ভয়াবহ বন্যা, পাহাড়ে কুকি চিনের নানা অপতৎপরতার কারণে এমনিতেই এই খাতের সাথে জড়িত পরিবহন, আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট মালিক র্কমচারিরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে এবারের নিরাপত্তাজনিত কারণে পর্যটক ভ্রমনে বিধিনিষেধে চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে এখানকার পর্যটন খাত। বন্ধ হতে পারে অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বছরের পর বছর এভাবে একের পর এক অজুহাতে পর্যটক ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে অস্থিরতা তৈরি হয়ে এই খাত সর্ম্পুণভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ভ্রমন পিপাসুদের আস্থা নষ্ট হয়ে গেলে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে।
একই বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় জীপ পিকআপ মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি নাছিরুল আলম বলেন, পর্যটক না থাকায় শতশত পর্যটকবাহী যানবাহনের চালক মালিক নিঃস্ব হয়ে গেছেন। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবারের ছুটিতে সবাই আশা করেছিলেন আশানুরূপ পর্যটক বান্দরবান বেড়াতে আসবেন। চালক মালিকরা অতীতের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিবেন, কিন্তু এই ধরনের বিধিনিষেধের ফলে সবাই চরম হতাশায় ভুগছেন।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ছোট বড় ৫০ টি রেস্তোরাঁয় অন্তত হাজারের অধিক র্কমচারি রয়েছেন। বেতন দিতে না পারায় অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে পর্যটক নিরুৎসাহিত করা হলে বাকিগুলোও টিকে থাকবে না। যত দ্রুত সম্ভব বিধি নিষেধ তুলে দিয়ে পর্যটক আগমন নিশ্চিত করা না গেলে এখানকার র্অথনীতি ভেঙে পড়তে পারে।
এদিকে বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য সীমিত আকারে হলেও পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার আবেদন জানিয়ে সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বান্দরবান পর্যটন ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের নেতারা।
এ সময় জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ব্যবসায়ীদের পাহাড়ের সার্বিক পরিস্থিতি অবগত করে ধৈর্য্য ধারণ করার অনুরোধ জানান।