বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় ‘ইন্ট্রোডাকশন টু ক্লাউড কম্পিউটিং’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
০১ জুন (সোমবার) সন্ধ্যা সাতটায় অনলাইনে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) এর কো-অর্ডিনেটর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, বিশ্বায়নের যুগে ক্লাউড কম্পিউটিং একটি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। ক্লাউড কম্পিউটিং কোনো নির্দিষ্ট প্রযুক্তি নয় বরং বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা একটি ব্যবসায়িক মডেল বা বিশেষ পরিসেবা। কম্পিউটিং সেবার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের পাশাপাশি ক্রেতারা প্রযুক্তি সেবার প্রতিও আগ্রহী। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের এই খাতে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ক্লাউড কম্পিউটিং এর উপর এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিসিএস সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
বিসিএস যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন এর সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এর মহাসচিব মুনির হাসান। অনলাইনে প্রায় দুই শতাধিক বিসিএস সদস্য এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি বিসিএস এর ফেসবুক পেজে প্রচারিত হয়। এসময় প্রায় ১ হাজার দর্শনার্থী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপভোগ করেন।
‘ক্লাউড কম্পিউটিং পরিচিতি’ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিয়ে মুনির হাসান বলেন, ক্লাউড এখন ডেপ্লয়মেন্ট মডেল থেকে সার্ভিস মডেলে ধাবিত হচ্ছে। সামনের দুনিয়া হবে সার্ভারলেস কম্পিউটিংয়ের।আগামী দিনের ব্যবসায়ের বড় একটি অংশ ক্লাউডকে ঘিরে আবর্তিত হবে। এ কারণে ক্লাউডের জন্য এবং ক্লাউড এনাবল প্রচুর জনবলের প্রয়োজন হবে। তাই এই প্রযুক্তির সঙ্গে সময়মতো নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।
দুই ঘণ্টার সেশনে তিনি ‘ইন্ট্রোডাকশন টু ক্লাউড কম্পিউটিং’ সম্পর্কে দর্শনার্থীদের একটি স্বচ্ছ ধারণা প্রদান করেন।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সম্ভাবনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে আমাজন ওয়েব সার্ভিসে কর্মরত এবং ক্লাউডক্যাম্প বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মাহ্দী-উজ-জামান বলেন, পার্টনার নেটওয়ার্ক বা মার্কেট প্লেস হিসেবে ক্লাউড প্লাটফর্ম ব্যবহার করা যায়। রিটেইল স্টোরের খরচ কমাতে সার্ভারলেস সিস্টেমে গেলে ৯০ শতাংশ খরচ কমবে। এছাড়াও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মাধ্যমে এক দিনের মধ্যে এপিআই গেটওয়ের মাধ্যমে কম্বাইন্ড ই-কমার্স সাইট তৈরি করা সম্ভব।
অপরদিকে নভোকম ইন্টারক্লাউড এর ক্লাউড সেবা ব্রিলিয়ান্ট ক্লাউডের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা তানভির এহসানুর রহমান দেশীয় ব্র্যান্ডিং নিয়ে দেশীয় ক্লাউড ব্যবহারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা ওপেন সোর্স সেবা দেচ্ছি। বিদেশী ক্লাউডের চেয়ে দেশী ক্লাউডে লেটেন্সি কম। দেশের যে কোনো জায়গা থেকে ৫ মিলিসেকেন্ডে ক্লাউড সার্ভারে সংযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু বিদেশী ক্লাউডগুলোর ক্ষেত্রে এই পিং সময় ৬০ সেকেন্ড।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এএসএম আবদুল ফাত্তাহ, রায়ান্স কম্পিউটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ হাসান জুয়েলসহ অন্যান্যরা ক্লাউড কম্পিউটিং এ দেশীয় বাজার সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের ধৈর্য্য ধারণ করে বিভিন্ন সাবধানতার কৌশল অবলম্বনে বাজার সম্প্রসারণের জন্য সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিসিএস যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন।
প্রসঙ্গত, আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।