সম্প্রতি প্রকাশিত জিএসএমএর ‘বাংলাদেশ: ড্রাইভিং মোবাইল-এনাবল ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে যেসব বাধা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হলো- নেটওয়ার্কের মান, সুলভ মূল্যে তরঙ্গের সহজলভ্যতা না থাকা, উচ্চ করহার, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, মৌলিক দক্ষতা ও স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা।
বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে, বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাত কোটি ৩৮ লাখ ১৭ হাজার জন, যেখানে মোট ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৭ কোটি ৯২ লাখ ২৭ হাজার।
অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ তরঙ্গ স্বল্পতা রয়েছে উল্লেখ করে সংগঠনটি বলছে, এখানে মাত্র ৭০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে থ্রি-জি সেবার জন্য।
এক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভিডেন্ট স্পেকট্রাম (৭০০ মেগাহার্টজ) দেওয়া হলে অপারেটররা কম খরচে নেটওয়ার্কের বিস্তার ঘটাতে পারবে, এর ফলে গ্রাহকদেরও কম খরচে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
প্রযুক্তি নিরপেক্ষতাসহ তরঙ্গ না থাকায় অপারেটররা শুধু দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজে থ্রি-জি সেবা দিতে পারছে।
যদিও আগামী ১৪ জানুয়ারি ফোর-জি লাইসেন্স আবেদন জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময়সীমা এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি তরঙ্গ নিলামের সময় নির্ধারণ করেছে বিটিআরসি।
টেলিকম খাতে অন্যান্য খাতের চেয়ে উচ্চ করহার রয়েছে উল্লেখ করে জিএসএমএ বলেছে, এর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতার ওপর।
উচ্চ করহার মোবাইল হ্যান্ডসেটের সহজলভ্যতায়ও প্রভাব ফেলছে জানিয়ে জিএমএমএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানিতে ২৫ শতাংশ কর দিতে হওয়ায় একদিকে স্বল্প আয়ের মানুষ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যায় পড়ছেন অন্যদিকে অবৈধপথে মোবাইল ফোন আনার প্রবণতাও বাড়ছে।
এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে বেশকিছু সুপারিশও করেছে জিএসএমএ।
এর মধ্যে রয়েছে কোনো ফি ছাড়াই অপারেটরদের প্রযুক্তি নিরপেক্ষ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া।
যদিও সম্প্রতি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের আগে বরাদ্দ পাওয়া তরঙ্গ ‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায়’ রূপান্তর একধাপে করলে মেগাহার্টজ প্রতি চার মিলিয়ন ডলার দিতে হবে। তবে আংশিক রূপান্তর করলে আগের খরচ অর্থাৎ সাড়ে নাত মিলিয়ন ডলার দিতে হবে।
সহজলভ্য সেবা দিতে ঠিক সময়ে সঠিক তরঙ্গ ছাড় দেওয়ার কথাও বলেছে জিএসএমএ।
টাওয়ার শেয়ারিংয়ে একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামো, মোবাইল সেবায় গ্রাহকের উপর থেকে কর উঠিয়ে নেওয়া, মোবাইল হ্যান্ডসেটের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার, মোবাইল ইন্টানেটের উপকারিতা নিয়ে সচেতনতা তৈরির পরামর্শও দিয়েছে জিএসএমএ।