বাংলাদেশের শেষ আর্মেনিয়ান মাইকেল জোসেফ মার্টিন ৮৯ বছর বয়সে মারা গেছেন। তার এ চিরপ্রস্থানে ৩০০ বছরের বেশি সময় পর এককালের প্রতাপশালী সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপস্থিতি বিলুপ্ত হয়ে গেল এ দেশ থেকে। মাইকেল জোসেফ মার্টিনের বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ১৯৪২ সালে তিনি বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এর এক দশক আগেই বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন তার বাবা।
ঢাকায় আর্মেনীয় সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র ছিল আর্মেনিয়ান চার্চ অব দ্য হলি রিসারেকশন। ১৭৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত সেই চার্চের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে ছিলেন মাইকেল জোসেফ মার্টিন। তিনি চার্চ প্রাঙ্গণে একটি বাড়িতে একাই থাকতেন এবং চার্চ অবস্থিত সমাধিক্ষেত্রের দেখাশুনা করতেন। এখানে মোট ৪০০ জনের সমাধি রয়েছে। এই সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত করা হয়েছিল তার স্ত্রীকেও, যিনি মারা যান ২০০৬ সালে। এছাড়া এখনে মাইকেল জোসেফ মার্টিনের অনেক পূর্বপুরুষও সমাহিত আছেন। তাই সমাধিক্ষেত্র দিয়ে হাঁটার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তেন তিনি। মাইকেল জোসেফ মার্টিন গত ১১ এপ্রিল মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন চার্চটির ওয়ার্ডেন আর্মেন আর্সলিয়ান। বাংলাদেশে প্রতি ২/৩ মাস পর বাংলাদেশে আসেন চার্চটির ওয়ার্ডেন।
অবশ্য মাইকেল জোসেফ মার্টিনের মৃত্যু হলেও বাংলাদেশে আর্মেনীয় যুগের শেষ নাও হতে পারে। সে আশার বানী শুনিয়ে গেছেন মার্টিন নিজেই। তার মৃত্যুর পর কে চার্চটির দায়িত্বে নেবেন তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন মার্টিন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, হয়তো কানাডা থেকে তার তিন মেয়ের কেউ এসে চার্চটির দায়িত্ব নিতেও পারে।