বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ঘাতক নয়ন বন্ড (২৫) পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জ আবীর হোসেন মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরগুনার বুড়ির চর ইউনিয়নে নয়নের সাথে পুলিশের এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওসি আবীর হোসেন জানান, রিফাত হত্যাসহ আরো ১১টি মামলার আসামি নয়ন বুড়ির চরে অবস্থান করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ধরতে গেলে পুলিশের ওপর গুলি চালায় নয়ন। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে নয়ন গুলিবিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, শটগানের গুলির দু’টি খোসা এবং তিনটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়নের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরো ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে ২টি মাদক আইনে, ৫টি বিভিন্ন অপরাধমূলক এবং ১টি অস্ত্র মামলা।
মাস দুয়েক আগে মিন্নির সাথে বিয়ে হয় নিহত রিফাত শরীফের। পরে মিন্নিকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি এলাকার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড। এ নিয়ে রিফাত ও নয়নের মধ্যে কয়েক দফা ঝগড়াঝাটিও হয়। পরে ফেসবুকে মিন্নির বেশ কিছু ছবি দিয়ে আপত্তিকর পোস্টও দেন নয়ন। এ নিয়ে রিফাতের সাথে তার বিরোধ আরো বাড়তে থাকে।
২৬ জুন বুধবার দুপুরে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে মিন্নি ও রিফাতকে আটকে হামলা চালায় নয়নের দল। তারা বহু মানুষের সামনেই রিফাতকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। অনেক চেষ্টা করেও হামলাকারীদের নিবৃত করতে পারেননি সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী মিন্নি। এরপর স্থানীয়রা রিফাতকে উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসার এক পর্যায়ে মারা যান শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ।
রাস্তার পাশের একটি সিসি ক্যামেরা থেকে রিফাতকে কোপানোর ভিডিওটি প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় এ হত্যাকান্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেলেন।