বান্দরবানের লামায় ছয় বছর আগে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল মোহাম্মদ আলী হায়দারের বাবা, আলমগীর সিকদারকে। সেই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পরিবারটিকে হত্যার মামলাটি তুলে নিতে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে অপরাধীরা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তার পরিবার।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় বান্দরবান প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান নিহত আলমগীর সিকদারের ছেলে মোহাম্মদ আলী হায়দার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত আলমগীর সিকদারের ভাই মোহাম্মদ দস্তগীর সিকদার মানিক। তিনি জানান, ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে লামার সরই পুলাং পাড়ায় নিজ খামার থেকে ফেরার পথে রাবার বাগানের কাছে পৌঁছালে সেলিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা আলমগীর সিকদারকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত সায়মন ত্রিপুরা ও বীর বাহাদুর ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারা অনুযায়ী জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করে যে, সেলিম উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন ভেট্টু ও তার ভাই জমির উদ্দিন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এবং নিজেরাও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল।
পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, হত্যার আগের দিন বিভিন্ন স্থানে সেলিম উদ্দিনের উপস্থিতির সিসিটিভি ফুটেজ, লোহাগাড়া মামনি হাসপাতালে যাওয়া, আবাসিক হোটেলে অবস্থান করার দৃশ্য এবং এমনকি যে কামারের দোকান থেকে হত্যার জন্য দা বানানো হয়েছিল, তারও ফুটেজ পাওয়া গেছে। এরপরও সেলিম উদ্দিন, জোড়া খুন মামলার আসামি ভেট্টু ও জমির উদ্দিন এখনো পলাতক। তবে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে।
এই দীর্ঘ ছয় বছরেও মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি, বরং তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য পরিবারটিকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট ঢাকার মতিঝিল থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে পরিবারের সবাইকে হত্যার লিখিত হুমকি পাঠানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান দস্তগীর সিকদার মানিক। উপস্থিত ছিলেন নিহত আলমগীর সিকদারের বাবা মো. আলী সিকদারসহ বান্দরবানের কর্মরত সাংবাদিকরা।