সপ্তাহজুড়ে টানা বৃষ্টির কবলে পুরো বান্দরবান জেলা। গতকাল শুক্রবার দিনভর বৃষ্টি তেমন হানা না দিলেও শনিবার মধ্যরাত থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে উজানের পানিতে উত্তাল সাঙ্গু আবারো চোখ রাঙাচ্ছে দুই পাড়ের জনবসতিতে। গত সোমবার থেকে নদীর পানি উপচে ঢুকে গেছে জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায়।
শুধ সাঙ্গুই নয়, বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বান্দরবানের ওপর বয়ে যাওয়া অপর নদী মাতামুহুরীও। এই দুই নদী প্লাবিত করেছে বান্দরবান সদর, ছাড়াও লামা-আলীকদমের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল।
পানির তোড়ে ভেসে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। এছাড়াও পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। বন্যা কবলিত এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন সরকারী আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গত মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও বান্দরবান শহরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের বাসষ্টেশনের অফিসার্স ক্লাব, হোটেল হিলটন, হিলভিউ, ফিষ্ট রেষ্টুরেন্ট এখনও পানির নীচে।
এদিকে সড়ক ডুবে সপ্তাহ ধরে বান্দরবানের সাথে দেশের সব জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে থানচি ও রুমার যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
আজ ষষ্ঠ দিনেও সড়ক থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়নি। ফলে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁচেছে। বান্দরবান থেকে মানুষের দুরত্বে যাতায়াতের অন্যতম বাহন এখন নৌকা।
এদিকে টানা বৃষ্টির ফলে বান্দরবানের বাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। মুদি পণ্য থেকে শুরু করে মাছ মাংস এবং সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। সীমিত পরিসরে বসছে বাজার। চড়া মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে নিত্যপণ্য। খুব তাড়াতাড়ি বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবারও সম্ভাবনা নেই। এমন পরিস্থিতিতে বান্দরবানের জনজীবন এখন বিপর্যস্ত।
বন্যা পরিস্থিতে মোকাবেলায় সার্বক্ষনিক প্রস্তুুতির কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।