সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোতে হঠাৎ করেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফটো এডিটিং এপ ‘ফটোল্যাব’।
স্মার্টফোনে এপটি ইন্সটল করলেই ব্যবহারকারী তার সংগ্রহে থাকা বিভিন্ন ছবিতে ক্যারিকেচার ও কার্টুন ইফেক্ট যোগ করতে পারেন।
পুরনো বা কম আকর্ষনীয় ছবিকেও চকচকে-ঝকঝকে করে দিচ্ছে এপটি। আর তাতেই নেট দুনিয়ায় পড়ে গেছে হৈ চৈ। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ছবির বিনিময়ে এপটি ইন্সটল হবার সময় ব্যবহারকারীর যেসব তথ্য নিচ্ছে, তা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়।
এমনকি এসব তথ্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হাতেও চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
পৃথিবীব্যাপী মানুষের ওপর নজরদারি করতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এতোদিন আইবিএম কর্পোরেশনের কাছ থেকে ফেইস রিকগনিশন প্রযুক্তি কিনতো। কিন্তু ফেইস রিকগনিশন পদ্ধতি মানুষের ওপর অযাচিত ও অন্যায়ভাবে ব্যবহার হতে পারে- সম্প্রতি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আইবিএম। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী অরভিন্দ কৃষ্ণা সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে চিঠি দিয়ে এই প্রযুক্তি তারা আর বিক্রি করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই হঠাৎ করে সামনে এলো ‘ফটোল্যাব’।
২০১০ সালে বানানো হলেও এতোদিন কোনো আলোচনাতেই ছিলোনা এপটি। আইবিএম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে ফেইস রিকগনিশন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবেনা বলে জানিয়ে দেবার মাত্র কয়েকদিনের মাথায় হঠাৎ করেই ১৫ জুন এপটি নতুনভাবে আপডেট এবং ভাইরাল হয়েছে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, পৃথিবীতে আসলে ‘ফ্রি’ বলতে কিছুই নেই। নগদ অর্থ ছাড়া আরো অনেক কিছুর বিনিময়ে নানা রকম সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো। তেমনই একটি সেবা হলো ‘ফটোল্যাব’। এবং তাদের মূল টার্গেট হলো লাখ লাখ ব্যবহারকারীর ছবিসহ ব্যক্তিগত তথ্যের একটি বিশাল ভান্ডার তৈরি করা।
এপটি ইনস্টল হবার সময় স্মার্টফোনের স্টোরেজ, ফোনবুক এবং অন্য আরো কয়েকটি জিনিসে এক্সেস (প্রবেশের অনুমতি) চায়। এতে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য এপ নির্মাতাদের হাতে চলে যাবার এবং সেগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে ব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি হয়।
তাই নেট দুনিয়ায় পাওয়া ফ্রি জিনিসকে সত্যিকারের ফ্রি না ভেবে নিজেদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।