২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়ার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপতৎপরতা শুরু করেছে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র। প্রশ্ন ফাঁস রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুসন্ধানী তৎপরতা জানতে পেরে নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে প্রতারক চক্র। তাদের এ কৌশল গ্রহণ করে ফেঁসে যাচ্ছে ওই সব চক্রের সদস্যসহ হাজারো পরীক্ষার্থীরা।
প্রশ্ন ক্রয়ে আগ্রহী ব্যক্তি এইচএসসি পরীক্ষার্থী কিনা তা জানতে পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড গ্রহণ করছে প্রশ্ন ফাঁসকারীরা। আর তাদের পাতা ফাঁদে এরই মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রুপ, পেজ ও ব্যক্তিগত আইডিতে হস্তান্তর করেছে রেজিস্ট্রেশন কার্ড। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসায় ওইসব আইডির সত্ত্বাধিকারী এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ভিত্তিতে এতে আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশ্ন বিক্রয় ও ক্রয়ে আগ্রহীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, চিহ্নিতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বাতিল করা হতে পারে। প্রশ্ন ক্রয়ে আগ্রহী ব্যক্তি পরীক্ষার্থী কিনা তা নিশ্চিত হতে যারা রেজিস্ট্রেশন কার্ড চেয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে এ প্রতিবেদক তাদের কয়েকজনের পরিচয় জানতে পেরেছেন। তাদের ফেসবুক প্রোফাইলের নাম হলো- এমডি আরিফ খান, আমানু শান, শাফরিন আহমেদ, হাসান আলী, অরণ্য খান, পাপ্পু চৌধুরী ও এমডি সাগর খানসহ আরো অনেকে।
এদিকে এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন শাখায় তৎপরতা চালিয়ে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের বেশ কিছু সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে অনুসন্ধানের সুবিধার্থে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেননি তারা।
এছাড়া প্রশ্ন কিনতে আগ্রহী কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পরে মিডিয়ার সামনে তাদের পরিচয় প্রকাশের পাশাপাশি পরীক্ষা বাতিল করা হবে। সেই সঙ্গে তাদের অভিভাবকদেরও সাজার আওতায় আনা হবে বলেও জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সন্তান যাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এবং এ ধরনের গ্রুপ বা পেজের সঙ্গে জড়িত থেকে শাস্তির আওতায় না পড়ে সেদিকে অভিভাবকদের বিশেষভাবে নজর রাখার জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে। কেননা, প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত তৎপরতায় যদি সন্তানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তবে সন্তানের পাশাপাশি ওই অভিভাবককেও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।