মমির জন্য পাসপোর্ট? সেখানে আবার তার পেশা হিসেবে লেখা আছে ‘রাজা’। তারপরে ব্র্যাকেটে লেখা ‘মৃত’। শুনতে যতই আজগুবি লাগুক, এ ঘটনা কিন্তু সত্যিই ঘটেছিল। যতদূর জানা যায়, আজ পর্যন্ত একজন মমিই এই সম্মান পেয়েছেন। তিনি দ্বিতীয় র্যামেস।
আন্তর্জাতিক পুরাতত্ত্ব বিষয়ক এক ওযেবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এই আশ্চর্য ঘটনার কথা। ১৯৭৪ সালে এই কাণ্ড ঘটেছিল। কিন্তু কেন একজন মমির জন্য পাসপোর্ট ইস্যু করতে হয়েছিল? সে গল্প সত্যিই খুব কৌতূহলোদ্দীপক।
১৩০২ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে জন্ম ফারাও দ্বিতীয় রামেসের। ৬৬ বছর তিনি তার রাজ্য সামলেছিলেন। মৃত্যুর পরে নীল নদের তীরে সমাধিস্থ করা হয়েছিল তাকে। ১৮৮১ সালে আবিষ্কৃত হয় মমিটি। সেখান থেকে তুলে এনে ১৮৮৫ সালে কায়রোর এক ইজিপ্টিয়ান জাদুঘরে রাখা হয় মমিটি।
সেই থেকে ওই জাদুঘরেই ছিল ফারাওয়ের মমি। কিন্তু গণ্ডগোলটা শুরু হয় ১৯৭৪ সালে। দেখা যায়, মমিটিতে পচন ধরে যাচ্ছে। অবিলম্বে সেটিকে রক্ষণাবেক্ষণ না করলে কালের গর্ভে তলিয়ে যাবে এক সুপ্রাচীন রাজার শেষ চিহ্নটুকু।
এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়া হবে মমিটি। কিন্তু ইজিপ্টের আইন অনুযায়ী, কোন মৃতদেহকেও দেশ ছেড়ে বিদেশে নিয়ে যেতে হলে সঠিক কাগজপত্র থাকতে হবে। তা ছাড়া এটাও ভেবে দেখা হয়, আইনানুগ সকল ব্যবস্থা থাকলে আরও একটি সুবিধা হবে। যদি ফ্রান্স থেকে মমিটি ফেরানো সমস্যা তৈরি করে, তাহলে ওই পাসপোর্ট রক্ষাকবচের কাজ করবে।
ভেবেচিন্তে ইজিপ্টের সরকার ইস্যু করে দেয় মমির পাসপোর্টটি। ফ্রান্সে মমিটিকে পরীক্ষা করে দেখা হয়। দেখা যায়, ছত্রাকের সংক্রমণ থেকেই নষ্ট হতে শুরু করেছে মমিটি। রক্ষা পায় রাজার দেহ। ফারাও ফিরে আসেন নিজের পুরানো বাসস্থানে।