বান্দরবানের বন্যা পরিস্থিতি গতকাল শনিবারের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। আজ (রবিবার) সকাল থেকে জেলার কোন উপজেলায় নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি।
রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বান্দরবান সদরে প্রায় ১০ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে ছিল বাসষ্টেশন ও মেম্বার পাড়া এলাকা। লামা আলীকদমেও ডুবে থাকা কিছু এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো দুএকদিন লেগে যেতে পারে।
শনিবার থেকে ভারী বর্ষণের পর দিনভর পানিতে তলিয়ে যাওয়া বান্দরবান শহরের টাউন হল থেকে বন বিভাগ এলাকা, নোয়া পাড়া, হিলবাডের্র সামনের সড়ক, মেম্বার পাড়া, বাসষ্টেশন এলাকা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামনের সড়ক, হোটেল পূরবী এলাকা, জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।
এর আগে এসব সড়ক ওআশাপশের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয়রা। অনেকেই এসময় আশপাশের উঁচু ভবন, আবাসিক হোটেল ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।
রবিবার সকাল থেকে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটতে শুরু করলে শহরের মানুষের মধ্যে অজানা আতংক বিরাজ করে। মানুষ পুরোপুরি পানিবন্দি হয়ে পড়েন। অনেকেই ঘরবাড়ির মালামাল নিয়ে দুর্দশায় পড়েন। স্বল্প দরত্বের যাতায়াতেও মানুষের ভরসা ছিল নৌকা। কোথাও কোথাও বাঁশের ভেলায়ও অনেককে যাত্রা করতে দেখা গেছে।
একই দিন দুপুরের পর থেকে পুরো জেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে কিছুক্ষণের মধ্যে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বন্ধ হয়ে জনজীবন পুরোই বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে।
তবে রবিবার দুপুরের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এবারের বন্যায় পুরো জেলায় অন্তত অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। পানিতে ভেসে গিয়ে রুমায় মারা যায় ১ ব্যক্তি।
এখনো পর্যন্ত ত্রাণ নিয়ে কোন অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশান জানায়, জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৪৫০ মে.টন খাদ্য শষ্য, ১২৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র বরাদ্দ করা হয়। জেলা প্রশাসনে খোলা হয় সার্বক্ষনিক যোগাযোগ কেন্দ্র।
যান চলাচল শুরু হয়নি বান্দরবান কেরাণীহাট সড়কে: বান্দরবান কেরাণীহাটের বাজালিয়ার বরদুয়ারায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গত ৮ দিন ধরে বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযাগ বন্ধ রয়েছে। রবিাবার পর্যন্ত তা চালু হয়নি।