নিজের সন্তানকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন এক মা। পরে কয়েকজন যুবকের সহায়তায় একটি দোকানে ঢুকে প্রাণে বাঁচেন তিনি।
চট্টগ্রামের বন্দর থানাধীন ইপিজেড ২নং পকেট গেইট মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এক ফেসবুক পোস্টে ওই দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, ছেলেধরা সন্দেহে এক পথচারী ওই নারীকে মারধর শুরু করেন। এরপর আশপাশের আরও মানুষ তার ওপরে হামলে পড়ে।
একপর্যায়ে কয়েকজন যুবকের সহায়তায় জে এফ মেডিকেল হল নামে পাশের ফার্মেসি দোকানে ঢুকে পড়েন রক্তাক্ত ওই নারী। এ সময় তার নিজের ছেলেকেই আঁকড়ে ধরে ছিলেন তিনি।
ফার্মেসির সিসিটিভি ফুটেজে পুরো ঘটনাটি উঠে আসে। ওষুধের দোকানটির মালিক ইব্রাহিম বলেন, “মারধরের একপর্যায়ে ওই নারী আত্মরক্ষার্থে আমার দোকানে ঢুকে পড়েন। জনতা সেখানেও ঢুকে মারধরের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে আমরা দোকানের শাটার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পার্শ্ববর্তী দোকানের মালিক-কর্মচারীর সহায়তায় ওই নারীকে পুলিশের হাতে তুলে দিই। পরবর্তীতে জানতে পারি ওই নারীর সঙ্গে থাকা ছেলেটি তারই সন্তান।”
আহত নারীর সঙ্গে থাকা আইডি কার্ডে দেখা যায়, তার নাম সালমা জাহান। তিনি একটি গার্মেন্টসের সুইং অপারেটর। একই এলাকার বাসিন্দা ওই নারী নিজের শিশুকে নিয়ে কোনো কাজে বের হয়েছিলেন।
এদিকে ছেলে ধরা সন্দেহে সাম্প্রতিক কয়েকটি হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে সতর্কতা উচ্চারণ করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, সন্দেহজনক ঘটনা অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনো নিরীহ মানুষকে হত্যা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের সহায়তা নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।