নাইক্ষ্যংছড়িতে ডাকাতের ভয়ে বাড়িছাড়া ৪ পরিবার পেলো নতুন ঘর

মুফিজুর রহমান, নাইক্ষ্যংছড়ি ॥ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সাতগইজ্জাপাড়া ও সোনাইছড়ি এলাকায় ডাকাতের ভয়ে পাড়া ছেড়ে স্কুলে আশ্রয় নেওয়া চার চাক পরিবার পেয়েছে নতুন ঘর। ৩১ মার্চ শনিবার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি’র পক্ষ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে অসহায় চাক পরিবার গুলোকে নিরাপদে বসবাস করার জন্য নতুন ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। নতুন ঘর প্রাপ্তরা হলেন চাইথোয়াই চাক, ছাহ্লা থোয়াই চাক, ক্যহ্লা চিং চাক, মং মং চাক।

ডাকাতের ভয়ে পালিয়ে এসে স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মংমং চাক জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সাতগইজ্জা পাড়ায় পাহাড়ি ও বাঙালি মিলে বসতি ছিল মাত্র সাত পরিবার। ফলে নামকরণ হয়েছিল সাতগইজ্জা পাড়া। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সম্প্রীতির বন্ধনে বসবাস করে আসছিল পরিবারগুলো। তবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে সাতগইজ্জা পাড়ায় ১০/১৫ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে দেখে এরা আতঙ্কিত হয়ে তিন কিলোমিটার দূরে মধ্যম চাক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে অবস্থান নেয়। প্রায় দেড় মাস পর পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নতুন জমিতে নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ায় এখন আতঙ্ক থেকে প্রায় মুক্ত হয়েছে তারা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যার যার কাজ কর্ম সেরে নতুন ঘরে এসে রাত যাপন করতে কোন ভয় হবে না বলে জানান তিনি।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, আতঙ্কে পালিয়ে আসা পরিবারগুলোর ব্যাপারে আমরা সার্বক্ষণিক খবরাখবর নিয়ে বান্দরবানের সাংসদকে অবগত করি। পরে তাঁর নিজ অর্থায়নে নিরাপদে চার পরিবারকে নতুন জায়গায় নতুন ঘর তৈরি করে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

নতুন ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি শামীম ইকবাল চৌধুরী, চাক সম্প্রদায়ের নেতা নাইদ অং চাক, যুবনেতা বাচিং চাক, উপজেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি ক্যানু ওয়ান চাক, প্রেসক্লাব সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ, যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কাজল, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি সোনাইছড়ি সড়কে কিছু অস্ত্রধারী যুবক পথযাত্রীদের জিম্মি করে টাকা, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ সময় অস্ত্রধারীর কবলে পড়েন সোনাইছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান বাহাইন মারমাসহ ব্যবসায়ী ও গাড়িতে অবস্থানরত যাত্রী এবং চালকেরা। ওইসময় ঘটনার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক পুলিশ বিজিবি অভিযান চালালে ওই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরদিন ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে সাতগইজ্জা পাড়ায় ওই অস্ত্রধারীদের আনাগোনা দেখতে পেয়ে আতঙ্ক পালিয়ে এসে চাক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় এই চার পরিবার।

শেয়ার করুন