আরাকান আর্মি (Arakan Army) হলো মিয়ানমারের একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা মূলত রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করছে।
সংক্ষেপে আরাকান আর্মির মূল তথ্য:
- প্রতিষ্ঠা: ২০০৯ সালে
- অধিভুক্ত: ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান (ULA)
- মূল উদ্দেশ্য: রাখাইন রাজ্যের জন্য স্বায়ত্তশাসন ও জাতিগত অধিকারের স্বীকৃতি
- কার্যক্রম: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর (Tatmadaw) বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই
- অঞ্চল: রাখাইন ও পাশের চীন ও ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা
আরাকান আর্মি মূলত রাখাইন জনগোষ্ঠীর জাতীয়তাবাদী স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। তারা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
সংক্ষেপে আরসা’র মূল তথ্য:
ARSA (Arakan Rohingya Salvation Army) হলো মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার দাবি নিয়ে কার্যক্রম চালায়।
- পুরো নাম: Arakan Rohingya Salvation Army
- স্থানীয় নাম: হারাকাহ আল-ইয়াকিন (Harakah al-Yaqin)
- প্রতিষ্ঠা: আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ ২০১৬ সালে
- নেতা: আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি (জন্ম: করাচী, পাকিস্তান, বড় হওয়া: মক্কা, সৌদি আরব। পিতা-মাতা রোহিঙ্গা) বর্তমানে বাংলাদেশের কারাগারে।
- উদ্দেশ্য:
- রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা
- মিয়ানমারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
- রাখাইন রাজ্যে মুসলিম পরিচয়ের স্বীকৃতি নিশ্চিত করা
উল্লেখযোগ্য কার্যকলাপ:
- ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ARSA মিয়ানমারের নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালায়।
- এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালায়, যার ফলে ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
- জাতিসংঘ এই দমন-পীড়নকে জাতিগত নিধন (ethnic cleansing) হিসেবে আখ্যা দেয়।
- ARSA-র বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ক্যাম্প-নিয়ন্ত্রণে সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে প্রভাব:
- ARSA-র সদস্যরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সক্রিয়।
- মোহিবুল্লাহ খুন, অপহরণ, আন্তঃগোষ্ঠী সংঘর্ষ—এসব ঘটনায় ARSA-র সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
- বাংলাদেশ সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ দিক:
- ARSA নিজেকে রোহিঙ্গাদের স্বার্থরক্ষাকারী হিসেবে দাবি করলেও,
- রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ তাদের সমর্থন করে না, কারণ তাদের কার্যক্রম রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।
এ বছরের ১৬ ও ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের ঝিরিমুখ এলাকায় তাদের কিছু সদস্য সাংগ্রাই বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দেয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন তাদের ব্যপারে খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার।
এ সংবাদ প্রকাশের পর থেকে আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে আরাকান আর্মি। একই সাথে বাংলাদেশের জনগণের, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে আরসা।