‘তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারও মানবাধিকার’

সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘নারীরা নিজেদের অধিকার নিয়ে যেভাবে কথা বলতে পারেন, ঠিক তেমনি করে হিজড়া জনগোষ্ঠীরাও তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারেন। কেননা হিজড়া জনগোষ্ঠী আমাদের সমাজের বা পরিবারের বাইরের কেউ নয়। তাই তারা দেশের সাংবিধানিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারে না। তাদের অধিকারও মানবাধিকার।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘বৈধ স্বীকৃতির ক্ষেত্রে বাধা ও উত্তরণের উপায়সমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, হিজড়া ব্যক্তিরা তাদের পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পৈতৃক মালিকানায় অংশ থাকা জরুরি বিষয়। মৃত্যুর পর তাদের সৎকার করা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। অনেক মৌলভীই তাদের সৎকার করতে অনীহা প্রকাশ করে যা খুবই দুঃখজনক। একজন হিজড়া ব্যক্তি রাতের আধারে লুকিয়ে তার মায়ের সাথে দেখা করে আসে। এটা খুবই হৃদয় বিদারক ব্যাপার।এ বিষয়গুলোতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা ছাড়া উপায় নাই। এসব সমস্যা সমাধানে শিগগিরই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে।

হিজড়াদের পক্ষে জয়া শিকদার বলেন- আমরা কোথাও ভালো কোনো বাসা ভাড়া নিতে পারি না। হিজড়া হওয়ার কারণেই কেউ বাসা ভাড়া দেয় না। কোথাও যাতায়াত করতে চাইলে বাসে উঠায় না। ভোট দিতে গেলে দুই-তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভোটের অধিকার আদায় করতে হয়।এগুলো আমাদের জন্য ভীষণ অপমানের বিষয়।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজি রিয়াজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নরওয়ে’র রাষ্ট্রদূত মিস সিডসেল ব্লেকেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল হক খান, আইসিডিডিআর বাংলাদেশের উপ-নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ‘বন্ধু’ গ্রুপের প্রতিনিধি ফারহানা জারিফ কানতা। এছাড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর পক্ষে কথা বলেন- চৈতি হিজড়া, ময়ুরী হিজড়া, জয়া শিকদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- এনএইচআরসিবি-এর উপ পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন- এনএইচআরসিবি এর সদস্য মিস বঞ্চিতা চাকমা।

শেয়ার করুন