তারেক রহমানই লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার নির্দেশদাতা—এমন মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এ হামলার বিষয়ে ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলকে জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের আজ সোমবার সকালে কক্সবাজারে এ কথা বলেন। সদর উপজেলার লিংক রোডের শহীদ এ টি এম জাফর আলম সড়কের (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক) ফলক উন্মোচন করেন।
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে ৭ ফেব্রুয়ারি জোর করে ঢুকে ভাঙচুর করেন বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার নেতা-কর্মীরা। এর পরদিনই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ওই মামলার রায়কে কেন্দ্র করেই লন্ডনে বিএনপির পক্ষ থেকে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগে প্রায় ১০ মিনিট পর্যন্ত বিএনপির কর্মীরা হাইকমিশনের নিচতলার অভ্যর্থনাকক্ষে হট্টগোল করে। হাইকমিশনের বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ধরে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা সেখানে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ভাঙচুর করেন। ওই দিন স্থানীয় সময় বিকেল চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমদ শাহীনকে আটক করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে, সেটি পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা যতটুকু খবর পেয়েছি, এই হামলার নির্দেশদাতা লন্ডনে অবস্থানরত দীর্ঘদিন ধরে পলাতক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর পরিকল্পনাতেই এ হামলা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে ইন্টারপোলকে জানানো হয়েছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দশ বছর ও মানি লন্ডারিং মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, কোনো দণ্ডিত ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবেন না। তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করতে তড়িঘড়ি করে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ৭ ধারা তুলে দিয়েছে। এখন এটা পরিষ্কার, কেন ধারাটি বাতিল করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কারাগারে বসে গুলশান কার্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা চিন্তা করলে হবে না। বিএনপি নেতারা যদি কারাগারকে গুলশান কার্যালয় মনে করেন, তাহলে ভুল হবে। বেগম জিয়া চান, তাঁর সঙ্গে গৃহপরিচারিকা থাকুক, এয়ারকন্ডিশন থাকুক, কিন্তু এটা তো জেলকোড সমর্থন করে না। এমনকি ডিভিশনেও নেই। জেলকোড সমর্থন করে না, এমন কোনো কাজ করা যাবে না।
কাদের আরও বলেন, খালেদা জিয়া দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে মর্যাদাবান ব্যক্তি। সেটা বিবেচনা করে ডিভিশন না থাকা সত্ত্বেও তিনি ডিভিশনের সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এখন আদালতও নির্দেশনা দিয়েছে ডিভিশন দেওয়ার জন্য। সরকার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ভাঙার জন্য বিএনপিই যথেষ্ট। সেখানে অন্য কাউকে চক্রান্ত করতে হয় না।’
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান, কক্সবাজার-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
এরপর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে ফেরার পথে বেলা দুইটায় উখিয়ার কোটবাজারে এক পথসভায় বক্তব্য দেন।