জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র চার দিন বাকি। প্রার্থীরা যার যার মতো প্রচারণায় ব্যস্ত। ভোটারদের সমর্থন আদায়ে সবাই প্রয়োগ করছেন নানামুখী কৌশল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে ভোট সংখ্যায় একটি বড় অংশই তরুণ ভোটার। যাঁরা প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছেন, তাঁদের অনেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো, ভোট দেবার ব্যাপারে তাঁদের আগ্রহ কেমন, কী কী বিষয় প্রভাব ফেলবে তাঁদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সিদ্ধান্তে। জানতে চাওয়া হয়েছিলো পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন হওয়া না-হওয়ার বিষয়ে যে বিতর্ক রয়েছে, সে বিষয়েই বা তাঁদের ভাবনা কী। এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে বেশ কয়েকজন তরুণ ভোটারের সাথে কথা বলেছেন মোঃ জুয়েল। তারই কয়েকটি তুলে ধরা হলো এখানে:
জাতীয় নির্বাচনে প্রথম ভোট দিতে যাচ্ছি, খুব ভাল লাগছে। সব দলের ইশতেহারগুলো পড়েছি এবং ভালো লেগেছে। তবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন বলতে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করাটাই প্রাধান্য পাওয়া উচিত।
যে জিনিসগুলোকে কেন্দ্র করে শান্তিচুক্তি করা হয়েছিলো সেগুলো পূরণ করা হয়নি তবে আমার ভোট সিদ্ধান্তে এর প্রভাব থাকবে। ভোটকেন্দ্র কোথায় তা এখনো জানতে পারিনাই।ভোটের দিন অবশ্যই ভোট দিতে যাবো।
নির্বাচনী প্রচরণায় টাকার প্রভাব না থেকে রাজনৈতিক আদর্শ এবং সততা নিয়েই রাজনৈতিক কর্মীরা কাজ করতে এগিয়ে আসবে এ আশা করি।
- মং শৈ শৈ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস, ডিপ্লোমা ০১৮
প্রথমবার ভোট দিবো ভাল লাগছে। নির্বাচনি ইশতেহারগুলো প্রায় পড়েছি, সেগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও মাদক নিমূল, এবং সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধির বিষয়গুলো ভালো লেগেছে।
ঐক্যজোটের শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা, যোগ্য অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়গুলো ভালো লেগেছে।
তারুণ্যের শক্তিতে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে চাই এবং তাই যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবো। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ থাকলে ভোট দিতে যাবো।
- রিমি চাকমা, ইংরেজি বিভাগ, তৃতীয় বর্ষ, বান্দরবান সরকারি কলেজ।
গণতন্ত্র চর্চার একটি পর্বে অংশ নিতে যাচ্ছি। ভালো লাগছে। সব দলের ইশতেহার পড়া হয়েছে। এর মধ্যে ঐক্যজোটের শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা, যোগ্য অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভালো লেগেছে।
আওয়ামী লীগের ৭ মেগা প্রজেক্ট দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন ভাল লেগেছে। এটি সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে তা প্রত্যাশা করি। পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পর্কে খুব একটা জানাশোনা নেই।
ব্যাংক খাতে দুর্নীতি হ্রাস, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা হোক তা চাই। বান্দরবান সদরে ভোট কেন্দ্র এবং ভোটের দিন অবশ্যই ভোট দিতে যাবো।
- মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মৃত্তিকা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
দেশে একটি স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করুক। যে দলই রাষ্ট্রপরিচালনায় আসুক না কেন, দেশের চলমান উন্নয়ন যাতে ব্যাহত না হয় এবং সরকার যাতে জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। প্রথমবার ভোট দিতে যাচ্ছি, অস্থিরতা কাজ করছে।
দুই জোটের ইশতেহারগুলো এখনো পড়া হয়নি। যারা দুর্নীতিমুক্ত দেশ, প্রতিটি পরিবার থেকে একজনকে চাকরির সুযোগ প্রদান, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ঘুষ বন্ধ, জনগণকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি করবে তাকেই ভোট দেবো। শান্তিচুক্তি সম্পর্কে আসলে তেমন একটা সুস্পষ্ট ধারনা নেই। বান্দরবান শহরেই ভোটকেন্দ্র। ভোট দিতে যাবো।
- মোঃ ওসমান গনি, বি. এফ. এ (অনার্স), নারায়নগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউট (আর্ট কলেজ)
এবার প্রথম ভোট দেবো। অবশ্যই অনেক এক্সাইটেড। আমার ভোটকেন্দ্র রেইচা প্রাইমারি স্কুলে। সবকিছু ঠিক থাকলে সপরিবারে ভোটের দিন ভোট দিতে যাবো। ইশতেহার পড়া হয়নি। যারা স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়বে, বৈষম্য দূর করবে, সহিংসতা রুখে দিবে তাদের সাথে আছি। আমি যাদের ভোট দিবো, প্রত্যাশা করি তারা শান্তিচুক্তির ব্যাপারে এগিয়ে আসবেন, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
- মাধবী তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলা বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ, বান্দরবান সরকারি কলেজ