করোনার কারণে স্কুল বন্ধ হয়ে আছে। ঢাকার আদাবর বাজারের কাছে একটি ছোট কিন্ডারগার্টেন স্কুল পপুলার ইন্টারন্যাশনাল। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আমিনা বেগম জীবন বাঁচানোর জন্য রোজগার করতে ফল বিক্রি করছেন!
ইতিমধ্যে তিনি যে বাসায় থাকতেন ভাড়া দিতে না পারায় সেটি ছেড়েছেন। বাসার সকল জিনিসপত্র নিয়ে উঠেছেন বন্ধ হয়ে থাকা স্কুলটিতে। স্বামী আর দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার।
আমিনা বেগম জানিয়েছেন, স্কুলের ভাড়াও বাকি পড়েছে। তিনি চিন্তাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘আম তো কিছুদিন পর শেষ হয়ে যাবে। তখন কী করব? কারো কাছে হাতও তো পাততে পারব না।’
স্কুলটিতে শিক্ষক আছেন ১২ জন। তারা বেতনের সঙ্গে টিউশনির আয় জোড়াতালি দিয়ে চলতেন। এখন সবই বন্ধ। অনেকে ঢাকা ছেড়েছেন।
দেশজুড়ে পাড়ায় পাড়ায় গড়ে ওঠা ছোটখাটো এই স্কুলগুলো প্রায় সবই ভাড়াবাড়িতে চলে। আমিনার মতো অনেক উদ্যোক্তা নিজেরাই প্রধান শিক্ষক। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনসহ সব খরচ ওঠে শিক্ষার্থীদের বেতন থেকে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনাবন্ধ শুরু হয়েছে গত ১৭ মার্চ থেকে। সেই ইস্তক শিক্ষার্থীদের বেতনপত্র আদায় বন্ধ। উদ্যোক্তারা বলছেন, স্কুল খুললে অনেক ছেলেমেয়ে হয়তো ফিরবে না। বাড়িওয়ালারা ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। শিক্ষকদের মতো অনেক উদ্যোক্তাও গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন বা যাচ্ছেন। শিক্ষকেরাও চলে যাচ্ছেন, পেশা বদলাচ্ছেন।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলছেন, হবিগঞ্জের একজন শিক্ষক চা-কফি বিক্রি করছেন। দিনাজপুরের একজন শিক্ষক রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করছেন। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের একজন শিক্ষক নৌকা চালাচ্ছেন।