বাংলাদেশের একটি আদালত আজ জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াকে ৭ বছর জেল দিয়েছে এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
বাকি তিনজন আসামীদের একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তৎকালীন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান এবং হারিস চৌধুরীর একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না।
হারিস চৌধুরী ছাড়া বাকি সবাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
প্রচলিত আইনে এটিই সর্বোচ্চ শাস্তি।
রায়ের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই রায় দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখাই সরকারের উদ্দেশ্য।”
এই রায়ের প্রতিবাদে বিএনপি মঙ্গলবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ঢাকা থেকে বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ ১৫টি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এই মামলার রায় দিয়েছেন বিচারক।
ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে থেকে এ ধরনের অপরাধ যেন কেউ না করে, সে জন্য কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করে এই আদালত।
এর আগে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই মামলাটির বিচার চলবে বলে জানিয়ে দেয় আদালত।
আজকে আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কেও উপস্থিত ছিলেন না।
হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করেছিলেন খালেদার আইনজীবীরা। সে বিষয়ে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচাপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার তা খারিজ করে দেয়।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া প্রায় আটমাস যাবত কারাগারে আছেন।
মামলার অভিযোগে কী বলা হয়েছে?
দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ টাকা লেনদেন করা হয়েছে বলে মামালার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ টাকার কোন উৎস তারা দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানতে পারে যে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করে।
সেটির ট্রাস্টি ছিল খালেদা জিয়ার দুই ছেলে। সে ট্রাস্টের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে টাকা সংগ্রহ করা হলেও সেটি দাতব্য কাজে খরচ করা হয়নি।
দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ২০১১ সালের আগস্ট মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে।
২০১৪ সালের মার্চ মাসে এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়।
এরপর মামলার কার্যক্রম স্থগিতে আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে যান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ।