জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনে নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে জামিন শুনানি শুরু হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। এর ওপর শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরপর শুনানি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
এর আগে শুনানিতে হট্টগোল এড়াতে উভয়পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবী থাকতে পারবেন বলে জানান প্রধান বিচারপতি। তবে এ নির্দেশনা মানেনি কোনো পক্ষই।
আদালত কক্ষে যেতে না দেওয়ায় আপিল বিভাগের গেটে সকালে পুলিশের সঙ্গে হট্টগোল হয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের। পরে বিষয়টি অবহিত করা হলে প্রধান বিচারপতি আইনজীবীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়ে দু’পক্ষকে কিছুক্ষণ সময় দেন।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ঘিরে আদালতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন জমা দেয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে শুনানির জন্য ধার্য ছিল গত ৫ ডিসেম্বর। একই সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদনের দাখিলের দিন ধার্য ছিল ওই দিন।
তবে সকালে শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রতিবেদন আসেনি জানিয়ে সময়ের আরজি জানান। আদালত ১১ ডিসেম্বর (গতকাল) চিকিৎসা প্রতিবেদন দিতে এবং ১২ ডিসেম্বর (আজ) শুনানির জন্য ধার্য করেন।
এরপর বিএনপিসমর্থক আইনজীবীদের হট্টগোল, হইচই, স্লোগান ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিরা একবার এজলাস ছেড়ে চলে যান।
গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড হলে তাকে রাখা হয় নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। মামলায় হাইকোর্টে আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত বছর ৩০ অক্টোবর তার সাজা বেড়ে ১০ বছর কারাদণ্ড হয়।
আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত বছর ২৯ অক্টোবর ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত খালেদা জিয়াসহ চার আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আইনজীবীদের মাধ্যমে হাইকোর্টে আপিল ও জামিনের আবেদন করেন তিনি।
গত ৩১ জুলাই এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজের আদেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপর ওই আদেশ বাতিল চেয়ে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। এছাড়া খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে গণমাধ্যমে যেসব প্রতিবেদন এসেছে সেসব যুক্ত করে ২৪ নভেম্বর একটি সম্পূরক আবেদন করেন তারা।