জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র,দশআনি, ঝিনাইসহ অন্যান্য শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নতুন করে বন্যা কবলিত হয়েছে সদরের মেষ্টা, কেন্দুয়া, তিতপল্ল্যা, ইটাইল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। শুক্রবার বন্যার পানিতে ডুবে দুই ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে জেলার ৪৭ ইউনিয়ন ও ৮ পৌরসভায় চার লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। জেলা প্রশসনের পক্ষ থেকে জোরদার করা হয়েছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।
এখন পর্যন্ত বন্য দুর্গতদের জন্য ৪৩৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকার শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
তবে মাঠ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, এখন পর্যন্ত যে ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা দিয়ে একতৃতীয়াংশ মানুষকে ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনা গেছে। দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ত্রাণ সহায়তা পায়নি।
দুর্গতরা বলছেন, নিজেদের খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গবাদিপশুর খাবারেও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে অন্তত ১৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
এ দিকে শুক্রবার সকালে মাদারগঞ্জের জোড়খালি ইউনিয়নের বেড়াবেতাগা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কমল মিয়া (৫০) বাড়ির পাশে পাট কাটার সময় বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরে সকাল ১০টার দিকে পাট ক্ষেতের পাশে তার মৃতদেহ ভেসে ওঠে।
দুপুরে একই উপজেলা উপজেলার আমতলী এলাকায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া সেচ পাম্পের বিদ্যুতের লাইন খুলতে গিয়ে ফকির আলীর ছেলে এখলাছ (২৫) ও মৃত বদি মিয়ার ছেলে আরিফ(২৪) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পানিতে পড়ে যান। এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।
সকালে বকশীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার কাগমারীপাড়া এলাকার ইরান মিয়ার তিন বছর বয়সী শিশু জিসান বাড়ির পাশে খেলার সময় বন্যার পানিতে পড়ে যায়। পরে শিশু জিসানের মৃতদেহ পানিতে ভেসে ওঠে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তারা তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।