জাতিসংঘের ৭৫ বছর পূর্তি এবং ৭৫তম বার্ষিক সাধারণ অধিবেশন নিয়ে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সাথে শলাপরামর্শ চলছে। ১৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সংস্থাটির সদর দফতরে এই অধিবেশন শুরু হবার কথা। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে হাই লেভেল জেনারেল ডিবেট অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য প্রদান এবং সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা, পরবর্তী কর্মকৌশল নির্ধারিত হবার কথা। কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু থমকে গেছে।
এমনকি, আদৌ সেই অধিবেশন হবে কিনা-তা নিয়ে শঙ্কা তৈরী হয়েছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে ৭৫তম বার্ষিক সাধারণ অধিবেশন কীভাবে হবে, তা নিয়ে সদস্য-রাষ্ট্রসমূহকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ঐ অধিবেশন অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয়েছে।’ নিউইয়র্কে লকডাউন শুরুর দিনেই বন্ধ হয়ে গেছে জাতিসংঘের সদর দফতর। অত্যন্ত জরুরী এজেন্ডা নিয়ে ভার্চুয়াল মিটিং হচ্ছে নিয়মিতভাবে। সশরীরে কেউই যাচ্ছেন না বিশ্বসংস্থার এই ভবনে। একইভাবে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মিশনগুলোও করোনায় বন্দি হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিশনগুলো কাজ করছে বলে জানালেন বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি নূরএলাহি মিনা।
৭৫তম সাধারণ অধিবেশনের অনিশ্চয়তা নিয়ে গত সপ্তাহে জাতিসংঘ মহাসচিব এ্যান্তোনিয়ো গুতেরেজ বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বনেতারা সশরীরে নিউইয়র্কে এসে শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানে সক্ষম হবেন কিনা তা কেউই বলতে পারছি না। এজন্যে আমরা বিকল্প হিসেবে ভার্চুয়াল অধিবেশনের কথা ভাবছি। একইসাথে জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও করা হতে পারে। এমন ভয়ংকর পরিস্থিতি জাতিসংঘের ইতিহাসে এটাই প্রথম।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সদর দফতরটি এমন একটি স্থানে অবস্থিত, যেটি হচ্ছে করোনা মহামারির কেন্দ্রবিন্দু। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারাবিশ্বের শীর্ষনেতাসহ হাজার হাজার কূটনীতিক-রাজনীতিক-সমাজসংগঠক-লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকের পক্ষে নিউইয়র্ক সিটিতে আসা সম্ভব হবে কিনা এবং স্বাগতিক সিটির স্বাস্থবিধি তা এলাও করবে কিনা-সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। এছাড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সাধারণ অধিবেশন করার উপযোগী অডিটোরিয়ামও নেই জাতিসংঘে। ছোট্ট এই ভবনে অধিবেশনের যে মিলনায়তন রয়েছে সেটি ঢেলে সাজাতে হলেও অনেক অর্থ আর সময় দরকার। এ অবস্থায় মানবতার সার্বিক কল্যাণে জাতিসংঘে সমবেত বিশ্বনেতারা অবাধ মতবিনিময়ের পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।