সবার মুখে ঘুরতে ঘুরতেই একটা শব্দ ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’ হয়ে গেল। শব্দটা ‘কোয়ারেন্টাইন’। বাংলায় গৃহবন্দী বললেও, ৭ থেকে ৭০ বছরের মানুষ পর্যন্ত সকলের মুখে মুখে ঘুরেছে ‘কোয়ারেন্টাইন’। কিন্তু শব্দ উচ্চারণ করলেও এর মানে কী, এটা বুঝতেই প্রথমদিকে সময় লেগে গিয়েছিল বহু মানুষের। তাই অনলাইন অভিধানে এর মানে খুঁজতে শুরু করে দিয়েছিলেন অনেকে। দেখতে দেখতে বছরের শেষে কেমব্রিজ অভিধান ঘোষণা করে এটিই দ্য মোস্ট সার্চড ওয়ার্ড।
সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে লকডাউন শুরু হতেই সকলকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়। তখন থেকেই এই শব্দের সঙ্গে অনেকের পরিচিতি ঘটে। এর আগে এই শব্দ মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে দেখা যায়নি। লকডাউনের পর মার্চ মাসের ১৮ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত এই শব্দ সব থেকে বেশি সার্চ করা হয়। নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত ১৪৩০০০ বার অভিধানে এই শব্দটি সার্চ করা হয়েছে। তবে একইসঙ্গে অভিধানে বদলানো হয়েছে এর মানে। পরিস্থিতির কারণে এর মানেও নাকি বদলে গেছে। বিশ্বের মানুষ এর আগেও মহামারীর সম্মুখীন হয়েছেন। তখনও ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গৃহবন্দী থাকতে বলা হত। কিন্তু তখন কোয়ারেন্টাইন শব্দ ব্যবহার করা হয়নি। শব্দটার মানে একরকম ছিল, কিন্তু পরিস্থিতিতে পরে এর মানে বদলে গেছে বলে, অভিধানেও সামান্য পরিবর্তন এসেছে।
আগে অভিধানে এর মানে ছিল– “কোনও রোগের সংক্রমন রুখতে এবং যাতে কেউ সংক্রামিত না হয় তার জন্য একটা সাধারণ সময়কাল পর্যন্ত কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না, ঘুরতে যেতে পারবেন না।” আর এখন এর মানে পাল্টে রাখা হয়েছে — “কোনও মানুষ বা প্রাণী ভাইরাসে আক্রান্ত হলে, তাকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সকলের থেকে দূরে রাখা উচিত, যাতে ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে।”
কেমব্রিজ অভিধান পুরস্কারের জন্য পাঁচটি শব্দকে বেছে নেয়। তার মধ্যে ‘কোয়ারেন্টাইন’-এর সঙ্গে ‘প্যানডেমিক’, ‘লকডাউন’-কেও রাখা হয়। কারণ এবছর করোনাভাইরাসের কারণে এই শব্দগুলোর মানেই বেশিবার অনলাইন অভিধানে খোঁজা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, কোয়ারেন্টাইন বিচ্ছিন্ন ও বন্দীদশা হলেও, তা কিন্তু আইসোলেশন নয়। আইসোলেশন হচ্ছে সেই অবস্থা, যখন কারও মধ্যে জীবাণুর উপস্থিতি নিশ্চিত ভাবে ধরা পড়বে। অথবা ধরা না পড়লেও উপসর্গ থাকবে এবং পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তখনই তাকে শুধু বন্দী থাকার নিদান দিলে হবে না, সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। সেই অবস্থার নামই আইসোলেশন।