গর্ভাবস্থায় বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে সাধারণ ঘরের কাজ করতেই পরামর্শ দেন চিকিত্সকরা। শরীর অ্যাক্টিভ থাকলে সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় কষ্ট কম হয়। কিন্তু এই সময় শারীরিক নানা সমস্যা এবং মেজাজের তারতম্য ঘটে। তাই গর্ভাবস্থায় নারীদের অনেক সাবধানে থাকা উচিত।
সামান্যতম ভুল বা অসচেতনতার কারণে অনাগত সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শনুযায়ী গর্ভাবস্থায় মা ও সন্তানের সুরক্ষায় বেশ কিছু পদক্ষেপ মেনে চলা জরুরি। পেটের চাপ পড়ে বা মানসিক অশান্তির কারণ হয়, এমন কোন কাজ গর্ভবতী মহিলাদের করা উচিত নয়। গর্ভবতী মহিলাদের হাসিখুশি এবং টেনশন-মুক্ত থাকা খুবই জরুরি। হাঁটা-চলা, ঘুম, খাওয়া, বিভিন্ন অভ্যাস সবকিছুর ওপরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা মা এবং গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য এ সময়ে মায়ের শরীরের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার কথা বলেন।
১. খুব ভারী কাজ কিছু না করলেও হালকা কাজ গর্ভাবস্থায় করা যেতে পারে। বরং হালকা হাঁটাচলা এবং ঘরের কাজ করলে গর্ভবতী মহিলাদের শরীর ভালো থাকবে। তবে কিছু ভারী কাজ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
২. বাড়িতে পোষ্য থাকলে বিশেষ করে বিড়ালের বর্জ্য গর্ভবতীরা কোনভাবেই পরিষ্কার করা যাবে না। বিড়ালের বর্জ্যে টক্সোপ্লাজমা গোনডি নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে, যা হবু মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের বড় ক্ষতি করতে পারে। ঘরে আর কেউ না থাকলে যদি একান্তই গর্ভবতী মহিলাকে পরিষ্কার করতেই হয় তাহলে খুবই সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে।
৩. ঘরে রান্না না করা যেকোনো খাবারই পরিহার করতে হবে। স্মোকড সিফুড, কাঁচা ডিম, চিজ ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। বেশি চাপ দিয়ে ঘসতে মাজতে হবে না, এমন বাসনপত্র গর্ভবতী মহিলারা পরিষ্কার করতে পারেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন একটানা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
৪. ধূমপান এবং অ্যালকোহলের মতো ক্ষতিকর অভ্যাস মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এতে গর্ভপাত, অকাল প্রসব এবং অন্যান্য সমস্যাও হতে পারে। গর্ভাবস্থায় ক্যাফেইন খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। চা কফি-তে গর্ভবতী নারীর উচ্চ রক্তচাপ, ঘন ঘন প্রস্রাব এবং হৃদস্পন্দন বাড়তে পারে।
৫. বিভিন্ন ওষুধ আছে, যেগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। কোন ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
৬. ঘরে রঙের কাজ চলাকালীন গর্ভবতী নারীর সেখানে থাকা উচিত নয়। কারণ পেইন্টে প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত রাসায়নিক এবং ক্ষতিকারক দ্রাবক রয়েছে, যা গর্ভবতী নারী ও গর্ভস্থ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
৭. গর্ভাবস্থায় হিল পরবেন না। পরলেও ৩ ইঞ্চি বা তারও কম হিলের জুতা পরতে পারেন। গর্ভাবস্থায় বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা উচিত নয়। ফলে পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে এবং শিরায় সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভবতী মায়েদের সুস্থ মন, সুস্থ দেহ একটি পরিপূর্ণ শিশুর জন্ম দিতে পারেন। তাই এই সময় সর্বক্ষণ পরিবারের পাশে থাকা কর্তব্য।