খালেদার আরেক মামলার বিচারে বাধা কাটল

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে অগ্নিসংযোগে আটজনের মৃত্যুর ঘটনায় খালেদা জিয়াসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে করা বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলার বিচারের বাধা কেটেছে। এ মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার বিচারপতি।

হাইকোর্ট ওই মামলার পুরো কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ দিয়েছিলেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। এই লিভ টু আপিল আজ মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। এর ওপর শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আগামী ২৯ মার্চ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, চৌদ্দগ্রাম থানায় ওই মামলাটি বাতিল চেয়ে এই মামলার আসামি বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট পুরো মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ২৯ মার্চ আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। এর ফলে এ মামলা চলতে আর বাধা নেই।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেন। অপর একটি মামলা অর্থাৎ বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি একটি এবং ৩ ফেব্রুয়ারি দুটি মামলা দায়ের করা হয় চৌদ্দগ্রাম থানায়। পরবর্তী সময়ে আদালত তিন মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর মধ্যে গত বছরের নভেম্বর মাসে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ কুমিল্লার কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে পাঠায়।

কুমিল্লার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার হালদারপাড়া এলাকায় কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় (মামলা নং-৪৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩)/ ২৫ (ডি) ধারায় একটি মামলা হয়। জেলা ও দায়রা জজ স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১–এ এই মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর এ মামলা হাইকোর্ট থেকে স্থগিত করা হয়।

আর ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আটজন নিহত ও ২০ জন আহত হন। ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় (মামলা নং-৫) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫ (ঘ) ধারায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপি ও জামায়াতসহ ২০–দলীয় জোটের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করা হয়। দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলাটির কার্যক্রম চলছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা অপর মামলাটির কার্যক্রম এত দিন স্থগিত ছিল। আজ স্থগিতাদেশ স্থগিত হওয়ায় মামলা পরিচালনায় বাধা কেটেছে।

শেয়ার করুন