আল-মামুন, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়ির গুইমারায় লটরির নামে চলছে রমরমা জুয়ার বাণিজ্য। গুইমারা দেওয়ান পাড়া ক্লাবের উদ্যোগে প্রতি পাঁচ দিনে সপ্তাহ ধরে দুই হাজার সদস্যের কাছ থেকে ১শ টাকা হারে নিয়ে চালানো হচ্ছে অবৈধ এ লটারি নামের রমরমা জুয়া।
এ লটারীর নামে জুয়ার কোন ধরনের অনুমতি নেই জানিয়ে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, প্রশাসনের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়া লটারির নামে এ জুয়া চলবে না। এ লটারির কোন অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। এ বিষয়ে গুইমারা থানার ওসিকে লটারি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জেনেছি। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ এ লটারি চলতে দেওয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র জানায়, দুই হাজার সদস্যের জন্য দুই হাজার পুরস্কারের লোভনীয় প্রতারণা ও দুর্নীতির ফাঁদ পাতা হয়েছে এ অবৈধ লটারিতে। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহের ড্র-র পূর্বে টাকা পরিশোধের শর্ত জুড়ে দেওয়াসহ পরিচালনা কমিটির যে কোন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত গণ্য হবে বলে কার্ডে উল্লেখ করা হয়। এ লটারি পরিচালনা কমিটিতে ১২ সদস্য ও ৪ জনকে উপদেষ্টা কমিটিতে রাখা হয়েছে।
প্রতি শনিবার বিকেল ৩টায় দেওয়ানপাড়া ক্লাবে অনুষ্ঠিত হওয়া এ লটারিতে ৪টি মোটরসাইকেল, ২টি ফ্রিজ, ২টি গরু, ২টি স্টিলের আলমারি ও ৪টি গ্যাস সিলিন্ডারসহ কিছু লোভনীয় পুরস্কারের নাম প্রদর্শণ করে লটারির নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। প্রতারণার অংশ হিসেবে লটারিতে ডিভিডি প্লেয়ার, টাচ স্ক্রীন মোবাইলও রাখা হয়ছে। যাতে সপ্তাহে প্রায় দুই লক্ষ টাকা উত্তোলন করেও ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দামের ৪টি মোবাইল পুরস্কার দেওয়া হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
লটারি নামে এ জুয়ার খেলায় উপদেষ্টা কমিটিতে রাখার বিষয়ে গুইমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ কমিটিতে রাখার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কে বা কারা এ কমিটিতে আমাকে রেখেছে তা আমার জানা নাই।
গুইমারা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মেমং মারমা বলেন, উপদেষ্টা কমিটিতে আমাকে রাখার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। লাটারি বিক্রির পর আমাকে নাম রাখার বিষয়টি জানানো হয়। এখন এলাকার বিষয় হওয়ায় না-ও বলতে পারছি না। হ্যা-ও বলতে পারছি না।
অন্যদিকে দেওয়ান পাড়া ক্লাবের পরিচালনা কমিটির কংজরী মারমার সাথে লটারির বিষয়ে প্রশাসনের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পরে আবার অস্বীকার করেন। অনুমতির প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বলেন, আমরা রাজনীতি করি। সারাদেশে এ লটারি চলে।