খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি॥ মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ফের যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষনচেষ্টার শিকার (১৫) সপ্তম শ্রেনীর ঐ ছাত্রীকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ধর্ষক মিঠুন চাকমা ওরফে বড়পেটা চাকমা পালিয়ে গেছে।
২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ায় ছাগল খুঁজতে গিয়ে সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রী ছাত্রী বখাটে মিঠুন চাকমা ওরফে বড়পেটা চাকমার হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। এ সময় ছাত্রীর চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে গেলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দীঘিনালা ও পরে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে নির্যাতিতার পরিবার মুখ খুলতে না চাইলেও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মীর মোশাররফ হোসেন শিশুটি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
এর আগে গত ২৮ জুলাই একই উপজেলার নয়মাইলে পুনাতি ত্রিপুরা কৃত্তিকা নামে পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের পর নশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গত মাত্র সাত মাসে খাগড়াছড়িতে ৮ শিশু ও কিশোরী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের মাত্র ৭ মাসের ব্যবধানে খাগড়াছড়িতে ৮ শিশু ও কিশোরী যৌন নির্যাতন এবং এক জনকে নির্যাতনের পর খুন করা হয়েছে। এরা প্রায় সকলেই স্কুল পড়–য়া। তার মধ্যে গত ২৮ জুলাই দীঘিনালার নয়মাইলে বিদ্যালয় থেকে টিফিনে খেতে এসে ধর্ষকদের লালসার শিকার হয়ে পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী পুনাতি ত্রিপুরা কৃত্তিকাকে। তারা ওই ছাত্রীকে ধর্ষনের পর নৃশংসভাবে লাশ কেটে টুকরা টুকরা করে কয়েকশ’ ফুট পাহাড়ের নিচে ফেলে দেয়। নৃশংস এই হত্যাকা-ের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িসহ সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া গত সাত মাসে জেলার আরো ৬ শিশু-কিশোরী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের মতো সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উইমেন্সে রির্সোস নেটওয়ার্ক এর সমন্বয়ক শেফালিকা ত্রিপুরা। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান জানান, প্রত্যেক ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে খাগড়াছড়ি পুলিশ। এ ছাড়া এক কিশোরীকে গণধর্ষণের দায়ে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল দীঘিনালার তিন যুবককে যাবজ্জীবন এবং এক লক্ষ টাকা করে অর্থদ- দেয় আদালত। এদিকে বিশেষ ট্রাইবুনাল চালু করে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি সচেতন মহলের।