খাগড়াছড়িতে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বিরোধী আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে। গতকাল বুধবার সংগঠনটি ভেঙ্গে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে আরেকটি নতুন দল গঠনের প্রতিবাদে প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ খাগড়াছড়িতে আজকের সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দেয়।
অবরোধের কারণে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অবরোধের সমর্থনে বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করছে ইউপিডিএফ’র নেতাকর্মীরা।
অবরোধের কারণে সব চেয়ে বেকায়দায় পড়েছে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীসহ শত শত পর্যটক। অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কায় নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে সতর্ক অবস্থায়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যতম বৃহৎ আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র (ইউপিডিএফ) প্রধান প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সংগঠনের ভিন্নমত পোষণকারীদের হত্যা, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, অপহরণ, জাতীয় দিবস বর্জনসহ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ এনে গতকাল বুধবার খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা ও জলেয়া চাকমা তরু’র নেতৃত্বে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে আলাদা সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
এদিকে, নতুন গঠিত ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সংগঠনটিকে রাষ্ট্রীয় মদদে নব্য মুখোশ-বোরকা বাহিনী আখ্যায়িত করে প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ মাদক-সন্ত্রাস দুর্বৃত্ত প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে বুধবার তাৎক্ষণিক খাগড়াছড়িতে লাঠি মিছিল ও সমাবেশ করে। এ সমাবেশ থেকে খাগড়াছড়িতে বৃহস্পতিবারের সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গেরিলা নেতা সন্তু লারমার নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করে জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র গ্রুপ শান্তিবাহিনীর সদস্যরা। সরকারের সাথে জনসংহতি সমিতির সম্পাদিত শান্তি চুক্তি এবং অস্ত্র সমর্পণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) প্রতিপক্ষ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবীতে রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করে সংগঠনটি।